পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষড়্‌বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২০৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সে 〉。" নীচে ঘাড় দুলিয়ে বাকিয়ে নাড়িয়ে কঁাপিয়ে হেলিয়ে বাকিয়ে। এমন-কি, সেই ভাষার সঙ্গে তুরু-বাকানি চোখ-টেপানি যোগ ক'রে ওঁদের কবিতার কাজও চলে। দেখা গেছে, তাতে দর্শকের চোখে জল আসে, নক্তির জায়গাটা বদ্ধ হয়ে পড়ে। n কিছু টাকা আমাকে ধার দাও, দোহাই তোমার। ঐ হু হাউ দ্বীপেই যেতে হচ্ছে আমাকে । এত বড়ো নতুন মজাটা— নতুন আর পুরোনো হতে পেল কই । হাচতে হাচতে বসতিটা বেবাক ফাক হয়ে গেছে। পড়ে আছে জাল-জালা সবুজ নন্তি । ব্যবহার করবার যোগ্য নাক বাকি নেই একটাও । এ তোমার আগাগোড়াই বানানো । বিজ্ঞানের ঠাট্টার পক্ষেও এটা বাড়াবাড়ি শোনাচ্ছে। এই ইহাউ দ্বীপের ইতিহাস বানিয়ে তুমি পুপেদিদিকে তাক লাগিয়ে দিতে চাও। ঠিক করেছিলে, তোমার এই অভাগ সে-নামওয়ালাকেই বৈজ্ঞানিক সাজিয়ে সারা দ্বীপময় হাচিয়ে ইচিয়ে মারবে । বর্ণনা করবে, আমি ঘাড়-নাড়ানাড়ির ঘটা ক'রে ঘটোৎকচ-বধ পাচালির আসর জমাচ্ছি কী ক'রে । হয়তো কোন হামাগুড়িওয়ালি মনোহর-ঘাড়-নাড়ানির সঙ্গে আমার বিয়ে দিয়ে বসবে, ঘাড়নাড়া-মন্ত্রে কনে নাড়বে মাথা বঁ। দিক থেকে ডান দিকে, আর আমি নড়িব ডান দিক থেকে ৯ দিকে । সপ্তপদী-গমন হয়ে উঠবে চতুর্দশপদী। ওদের সেনেট-ছলে ঘাড়নাড়া ভাষায় যখন ওরা সারে সারে পরীক্ষা দিতে বসেছে, তার মধ্যে আমাকেও বসাবে এক কোণে । আমার উপর তোমার দয়ামায়া নেই, দেবে ফেল করিয়ে । কিন্তু ওদের স্পোর্টিং ক্লাবে হামাগুড়ি-রেলে আমাকেই পাওয়াবে ফাস্ট, প্রাইজ । বলে দিচ্ছি, পূপেদিদিকে এমন করে হাসাতে পারবে মনেও কোরো না । বেশি বোকো না । চাণক্যপণ্ডিত শ্রেণীবিশেষের আয়ুবুদ্ধির জন্তে বলেছেন : তাবক্ষ বাচতে মূখ যাবং ন বক্‌বকায়তে – তুমি তো সংস্কৃত কিছু শিখেছিলে ? যতটা শিখেছিলেম তুলেছি তার দেড়গুণ ওজনে । নয়া-চাণক্য জগতের হিতের জন্যে যে উপদেশ দিয়েছেন সেটাও তোমার জানা দরকার দাদা, ছন্দ মিলিয়েই লেখা : তখন ইপি ছাড়িয়া বাচি যখন পণ্ডিত চুপায়তে — চললুম। আমার শেষ পরামর্শ এই, বৈজ্ঞানিক রসিকতা ছেড়ে দিয়ে ছেলেমান্থষি করে যতটা পার। এই কাহিনীটা পূপেদিদির কাছে একটুও পছন্দসই হয় নি। কপাল কুঁচকে বললে, এ কখনো হয় ? নস্তি নিয়ে পেট ভরে ? আমি বললেম, গোড়াতে পেটটাকেই যে সরিয়ে দিয়েছে।