পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষড়্‌বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২১৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সে R•H পষ্ণু বলিস কী। তা, সে গাছের উপর থেকে পড়ল কী করে। উধো। ঐ তো মজা । বাবার দয়া ! পষ্ণু। চল ভাই, চল, খোজ করতে বেরোই। কিন্তু, চিনব কী করে। উধো। সেই তো মুশকিল। কেউ তো তাকে দেখে নি। আবার ছবি তো হ, ভেকু বেটার চোখ গেল চিটেগুড়ে বুজে । পষ্ণু । তবে উপায় ? উধো। আমি তো হাটে ঘাটে যাকে দেখছি তাকেই জোড়হাত ক’রে জিগেল করছি, দয়া ক’রে জানাও, তুমিই কি গেছে। বাবা । শুনে তারা তেড়ে মারতে আলে । একজন তো দিল আমার মাথায় হু কোর জল ঢেলে । গোবরা । তা দিক গে। ছাড়া হবে না। খুঁজে বের করবই। যা থাকে কপালে । পঞ্চু । ভেকু বলে, গাছে চড়লেই তবে বাবার চেহারা ধরা পড়ে, যখন নীচে থাকেন চেনবার জো নেই । উপো । গাছে চড়িয়ে চড়িয়ে মানুষকে পরখ করব কী ক'রে, ভাই । আমি এক বুদ্ধি করেছি, আমার আমড়া গাছ আমড়ায় ভরে গেছে, যাকে দেখছি তাকেই বলছি, আমড়া পেড়ে নাও— গাছটা প্রায় খালি হয়ে এল, ডালগুলোও ভেঙেছে । পষ্ণু। আর দেরি নয় রে, চল। কপালের জোর যদি থাকে তবে দর্শনলাভ হবেই। একবার গলা ছেড়ে ডাক দে-না, ভাই ! গেছো বাবা, ও বাবা, দয়াল বাবা, পারুলবনে কোথাও যদি থাক লুকিয়ে, একবার অভাগাদের দর্শন দাও। গোবরা । ওরে হয়েছে রে, দয়া হল বুঝি । পষ্ণু । কই রে, কই । গোবরা । ঐ-যে চালতা গাছে । পষ্ণু । কী রে, চালতা গাছে কী । দেখছি নে তো কিছু। গোবরা । ঐ-ধে দুলছে । পঞ্চু । কী দুলছে । ও তো লেজ রে । উধো । তোর কেমন বুদ্ধি গোবরা, ও বাবার লেজ নয় রে, হহমানের লেজ । দেখছিল নে মুখ ভাঙাচ্ছে ? গোবরা । ঘোর কলি যে ! বাবা ঐ কপিরূপ ধরেছেন আমাদের ভোলাবার জন্তে । পষ্ণু। জুলছি নে, বাবা, কালামুখ দেখিয়ে ভোলাতে পারবে না। যত পার মুখ ভ্যাণ্ডাও, নড়ছি নে— তোমার ঐ জীলেজের শরণ নিলুম। গোবরা । ওয়ে, বাবা যে লম্বা লাফ দিয়ে পালাতে শুরু করল রে ।