পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষড়্‌বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সে २२S সেটা ছিল না বুঝি ? * না, ছিল না। চুপ করে থাকতুম যদি আমাকে স্বদ্ধ না জড়াতে। যদি বলতে, তোমার অতিথিকে তুমি জিরাফের মুড়িঘণ্ট খাইয়েছ, শর্ষেবাটা দিয়ে তিমিমাছ-ভাজ আর পোলাওয়ের সঙ্গে পাকের থেকে টাটকা ধরে আনা জলহস্তী, আর তার সঙ্গে তালের গুড়ির ডাটা-চচ্চড়ি, তা হলে আমি বলতুম, ওটা হল স্কুল । ওরকম লেখা সহজ । আচ্ছা, তুমি হলে কী রকম লিখতে। বলি, রাগ করবে না ? দাদা, তোমার চেয়ে আমার কেরামতি যে বেশি তা নয়, কম বলেই স্থবিধে । আমি হলে বলতুম— তাসমানিয়াতে তাল খেলার নেমস্তন্ত্র ছিল, যাকে বলে দেখা-বিনতি । সেখানে কোদুমাচুকু ছিলেন বাড়ির কর্তা, আর গিরির নাম ছিল শ্ৰীমতী হাচিয়েন্দানি কোরুক্কুনা। তাদের বড়ো মেয়ের নাম পাম্ফুনি দেবী, স্বহস্তে রেখেছিলেন কিন্টিনাবুর মেরিউনাথু, তার গন্ধ যায় সাত পাড়া পেরিয়ে । গন্ধে শেয়ালগুলো পর্যন্ত দিনের বেলা হাক ছেড়ে ডাকতে আরম্ভ করে নির্ভয়ে, লোভে কি ক্ষোভে জানি নে ; কাকগুলো জমির উপর ঠোঁট গুজে দিয়ে মরিয়া হয়ে পাখা ঝাপটায় তিন ঘণ্ট ধরে। এ তো গেল তরকারি। আর, জালা জাল ভর্তি ছিল কাঙ্কুটোর সাঙুচানি । সে দেশের পাকা পাকা আকৃম্বটো ফলের ছোবড়া-চোয়ানো। এই সঙ্গে মিষ্টান্ন ছিল ইকটিকুটির ভিকটিমাই, ঝুড়িভর্তি। প্রথমে ওদের পোষা হাতি এসে পা দিয়ে সেগুলো দ’লে দিল ; তার পরে ওদের দেশের সব চেয়ে বড়ো জানোয়ার, মাহুযে গোরুতে সিঙ্গিতে মিশোল, তাকে ওরা বলে গাণ্ডিলাঙ্ভুং, তার কাটাওয়ালা জিব দিয়ে চেটে চেটে কতকটা নরম করে আনলে । তার পরে তিনশো লোকের পাতের সামনে দমাদম হামানদিস্তার শব্দ উঠতে লাগল। ওরা বলে, এই ভীষণ শৰ শুনলেই ওদের জিবে জল আসে ; দূর পাড়া থেকে শুনতে পেয়ে ভিখারি আসে দলে দলে। খেতে খেতে যাদের দাত ভেঙে যায় তারা সেই ভাঙা দাত দান করে যায় বাড়ির কর্তাকে । তিনি সেই ভাঙা দাত ব্যাঙ্কে পাঠিয়ে দেন জমা ক’রে রাখতে, উইল করে দিয়ে যান ছেলেদের । যার তবিলে যত দাত তার তত নাম। অনেকে লুকিয়ে অন্তের সঞ্চিত দাত কিনে নিয়ে নিজের ব’লে চালিয়ে দেয়। এই নিয়ে বড়ো বড়ো মকদমা হয়ে গেছে। হাজারদাতিরা পঞ্চাশদাতির ঘরে