পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষড়্‌বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গল্পসল্প లలి ইরু বলত, পরীরা প্রজাপতি হয়ে উড়ে যায়। আরও অনেক কিছু ছিল তার অবাক-করা ঝুলিতে । কিন্তু, সবচেয়ে চমক লাগাতো সেই না-দেখা রাজবাড়িটা। সে যে একেবারে আমাদের বাড়িতেই, ছয়তে আমার শোবার ঘরের পাশেই । কিন্তু, মস্তর জানি নে যে। ছটির দিনে দুপুর বেলায় ইরুর সঙ্গে গেছি আমতলায়, কাচা আম পেড়ে দিয়েছি, দিয়েছি তাকে আমার বহুমূল্য ঘষা ঝিনুক । সে খোলা ছাড়িয়ে শুলপো শাক দিয়ে বলে বলে খেয়েছে কাচ আম, কিন্তু মস্তরের কথা পাড়লেই বলে উঠেছে, ও বাবা ! তার পরে মস্তর গেল কোথায়, ইরু গেল শ্বশুরবাড়িতে, আমারও রাজবাড়ি খোজ করবার বয়স গেল পেরিয়ে— ঐ বাড়িটা রয়ে গেল গর-ঠিকানা। দূরের রাজবাড়ি অনেক দেখেছি, কিন্তু ঘরের কাছের রাজবাড়ি— ও বাবা ! 砷 事 峰 খেলনা পোকার হারিয়ে গেছে, মুখটা শুকোনো । মা বলে, দেথ, ঐ আকাশে আছে লুকোনো । থোক শুধোয়, ঘরের থেকে গেল কী ক’রে । মা বলে যে, ঐ তো মেঘের থলিট ভ’রে নিয়ে গেছে ইন্দ্রলোকের শাসন-ছেড়া ছেলে । থোকা বলে, কখন এল, কখন খবর পেলে । মা বললে, ওরা এল যখন সবাই মিলি চৌধুরিদের আমবাগানে লুকিয়ে গিয়েছিলি, যখন ওদের ফলগুলো সব করলি বেবাক নষ্ট । মেঘলা দিনে আলো তখন ছিল নাকো পষ্ট— গাছের ছায়ার চাদর দিয়ে এসেছে মুখ ঢেকে, কেউ আমরা জানি নে তো কজন তারা কে কে । কুকুরটাও ঘুমোচ্ছিল লেজেতে মুখ গুজে, সেই স্বৰোগে চুপিচুপি গিয়েছে ঘর খুঁজে। আমরা ভাবি, বাতাস বুঝি লাগল বাশের ডালে, কাঠবেড়ালি ছুটছে বুঝি আটচালাটার চালে ।