পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষড়্‌বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গল্পসল্প ף מס চণ্ডী দিদি, তুমি বোধ হয় ও পাড়ার চণ্ডীবাবুকে জান ? জানি নে ! তিনি যে ডাকসাইটে নিন্দুক । বিধাতার কারখানায় খাটি জিনিস তৈরি হয় না, মিশল থাকেই । দৈবাৎ একএকজন উৎরে যায়। চণ্ডী তারই সেরা নমুনা। ওর নিন্দুকতায় ভেজাল নেই । জান তো, আমি আর্টিস্ট-মানুষ । সেইজন্তে এরকম খাটি জিনিস আমার দরবারে জুটিয়ে আনি । একেবারে লোকটা জীনিয়ল বললেই হয়। একটা এড়িয়ে গেলে আর খুঁজে পাওয়া যাবে না। একদিন দেখি, অধ্যাপক অনিলের দরজায় কান দিয়ে কী শুনছে । আমি তাকে বললুম, অমন করে খুঁজে খুঁজে বেড়াচ্ছ কাকে হে । সেটাই যদি জানতুম তা হলে তো কথাই ছিল না। চার দিকে চোখ কান খুলে রাখতে হয়, কাউকে বিশ্বাস করবার জো নেই— চোর-ছ্যাচড়ে দেশ ভরে গেল । বলে কী হে । শুনে অবাক হবেন, এই সেইদিন অমন আমার চাপার রঙের গামছাখানা আলনার উপর থেকে বেমালুম গায়েব হয়ে গেল । বলো কী হে, গামছা ! আঙ্কে হ্যা, গামছা বই-কি । কোণটাতে একটুখানি ছেড়া ছিল, তা সেলাই করিয়ে নিয়েছিলুম। তুমি অনিলবাবুর দরজার কাছে অমন ঘুরঘুর করছিলে কেন । পরের ছেড়া গামছা জোগাড় করবার রোগে তাকে ধরেছে নাকি । আরে ছি ছি, ওঁরা হলেন বড়োলোক, গামছা কখনো চক্ষেও দেখেন নি। টাকিস তোয়ালে না হলে ওঁর এক পা চলে না । তা হলে ? আমি ভাবছিলুম, ওঁর পাওনা তো বেশি নয়। অথচ, এত বাবুআনা চলে কী ক’রে । বোধ হয় ধার ক’রে ! আজকালকার বাজারে ধার তো সহজ নয়, তার চেয়ে সহজ ফাকি । আচ্ছা, তুমি পুলিশে খবর দিয়েছিলে নাকি ।