পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষড়্‌বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৩৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

র কাল তোমার ভালো লাগে নি চণ্ডীকে নিয়ে বকুনি ও একটা ছবি মাত্র । কড়া কড়া লাইনে আঁকা, ওতে রস নাই । আজ তোমাকে কিছু বলব, সে সত্যিকার 引爾1 কুসমি অত্যন্ত উৎফুল্ল হয়ে বলল, হ্যা হ্যা, তাই বলে । তুমি তো সেদিন বললে, বরাবর মানুষ সত্যি খবর দিয়ে এসেছে গল্পের মধ্যে মুড়ে । একেবারে ময়রার দোকান বানিয়ে রেগেছে । সন্দেশের মধ্যে ছানাকে চেনাই যায় না । দাদামশায় বললে, এ না হলে মাহুষের দিন কাটত না । কত আরব্য-উপন্যাস, পারস্ত-উপন্যাস, পঞ্চতন্ত্র, কত কী সাজানো হয়ে গেল । মানুষ অনেকখানি ছেলেমানুষ, তাকে রূপকথা দিয়ে ভোলাতে হয়। আর ভূমিকায় কাজ নেই। এবার শুরু করা যাক — এক যে ছিল রাজা, তার ছিল না রাজরানী । রাজকন্তর সন্ধানে দূত গেল অঙ্গ বঙ্গ কলিঙ্গ মগধ কোশল কাঞ্চী । তারা এসে খবর দেয় যে, মহারাজ, সে কী দেখলুম ; কারু চোখের জলে মুক্তো ঝরে, কারু হাসিতে থ’লে পড়ে মানিক ! কারু দেহ চাদের আলোয় গড়া, সে যেন পূর্ণিমারাত্রের স্বপ্ন। রাজা শুনেই বুঝলেন, কথাগুলি বাড়িয়ে বলা, রাজার ভাগ্যে সত্য কথা জোটে না অমুচরদের মুখের থেকে । তিনি বললেন, আমি নিজে যাব দেখতে । সেনাপতি বললেন, তবে ফৌজ ডাকি ? রাজা বললেন, লড়াই করতে যাচ্ছি নে । মন্ত্রী বললেন, তবে পাত্রমিত্রদের খবর দিই ? রাজা বললেন, পাত্রমিত্রদের পছন্দ নিয়ে কঙ্কা দেখার কাজ চলে না। তা হলে রাজহস্তী তৈরি করতে বলে দিই ? রাজা বললেন, আমার একজোড়া পা আছে । সঙ্গে কয়জন বাবে পেয়াদা ? রাজা বললেন, যাবে আমার ছায়াটা । আচ্ছা, তা হলে রাজবেশ পরুন—চুনিপায়ার হার, মানিক-লাগানো মুকুট, হীরেলাগানো কাকন আর গজমোতির কানবালা ।