পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষড়্‌বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৪৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\ტტ• রবীন্দ্র-রচনাবলী আলাদা, তোমার ইরুমাসির উন্টো। সেদিন তোমার ইরুমাসি শুরু করেছিল জটাইবুড়ির কথা। ঐ জটাইবুড়ির সঙ্গে অমাবস্তার রাত্রে আলাপ পরিচয় হ’ত। সে বুড়িটার কাজ ছিল চাদে বলে চরকা কাটা । সে চরকা বেশিদিন আর চলল না। ঠিক এমন সময় পালা জমাতে এলেন প্রোফেসার হরীশ হালদার । নামের গোড়ার পদবীটা ষ্টার নিজের হাতেই লাগানে । তার ছিল ম্যাজিক-দেখানো হাত । একদিন বাদলা দিনের সন্ধেবেলায় চায়ের সঙ্গে চি ড়েভাজ খাওয়ার পর তিনি বলে বসলেন, এমন ম্যাজিক আছে যাতে সামনের ওই দেয়ালগুলো হয়ে যাবে ফাকা । পঞ্চানন দাদা টাকে হাত বুলোতে বুলোতে বললেন, এ বিদ্যে ছিল বটে ঋষিদের জানা । শুনে প্রোফেসার রেগে টেবিল চাপড়ে বললেন, আরে রেখে দিন আপনার মুনি ঋষি, দৈত্য দান, ভূত প্রেত। পঞ্চানন দাদা বললেন, আপনি তবে কী মানেন । হরীশ একটিমাত্র ছোটো কথায় বলে দিলেন, দ্রব্যগুণ । আমরা ব্যস্ত হয়ে বললুম, সে জিনিসটা কী । প্রোফেসার বলে উঠলেন, আর যাই হোক, বানানে কথা নয়, মস্তর নয়, তস্তর নয়, বোকা-ভুলোনো আজগুবি কথা নয় । আমরা ধরে পড়লুম, তবে সেই দ্রব্যগুণটা কী। প্রোফেসার বললেন, বুঝিয়ে বলি। আগুন জিনিসটা একটা আশ্চর্য জিনিস, কিন্তু তোমাদের ঐসব ঋষিমুনির কথায় জলে না। দরকার হয় জালানি কাঠের । আমার ম্যাজিক ও তাই । সাত বছর হর্তকি খেয়ে তপস্যা করতে হয় না। জেনে নিতে হয় দ্রব্যগুণ । জানবা মাত্র তুমিও পার আমিও পারি। কী বলেন প্রোফেসার, আমিও পারি ঐ দেয়ালটাকে হাওয়া করে দিতে ? পার বই-কি । হিড়িংফিড়িং দরকার হয় না, দরকার হয় মাল-মসলার। আমি বললেম, বলে দিন-না কী চাই । দিচ্ছি। কিছু ন- কিছু না, কেবল একটা বিলিতি আমড়ার আঁঠি আর শিলনোড়ার শিল । আমি বললুম, এ তো খুবই সহজ। আমড়ার জাঠি আর শিল আনিয়ে দেব, তুমি দেয়ালটাকে উড়িয়ে দাও । আমড়ার গাছটা হওয়া চাই ঠিক আট বছর সাত মাসের । কৃষ্ণদ্বাদশীর চাদ ওঠবার এক দণ্ড আগে তার অফুরটা সবে দেখা দিয়েছে। সেই তিথিটা পড়া চাই