পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষড়্‌বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

やぬb* রবীন্দ্র-রচনাবলী দেখানো যাক— কার সনে নাছি জানি করে বসি কানাকানি, সাঝবেলা দিগবধূ কাননে মর্মরে । আঁচলে কুড়ায়ে তারা কী লাগি আপনহারা, মানিকের বরমালা গাথে কার তরে । এই কটা লাইনকে সাধুভাষায় ঢালাই করতে গেলে হবে এইরকম— সন্ধ্যাকালে দিগ্বন্ধু অরণ্যমর্মরধ্বনিতে কাহার সহিত বিশ্রস্তালাপে প্রবৃত্ত তাহা জানি না। জানি না কী কারণে ও কাহার জন্ত আত্মবিহ্বল অবস্থায় সে আপন বস্বাঞ্চলে নক্ষত্রসংগ্রহপূর্বক মাণিক্যের বরমাল্য গ্রন্থন করিতেছে। ‘সনে’ কথাটা এখন আর বলি নে, প্রাচীন পদাবলীতে ঐ অর্থে ‘সঙে’ কথা সর্বদা পাওয়া ষায় । ‘নাহি জানি’ কথাটার নাহি’ শব্দটা এখনকার নিয়মে 'জানি'র সঙ্গে মিলতে পারে না । ‘নাহি’ শব্দের সংস্কৃত প্রতিশব্দ "নাস্তি’, চলিত কথায় ‘নেই’ । SBBB BBB SBBBSS SBBSS BB BS BBB SBB BS SSBBBBBSS BBBBB এখনো চলে, কিন্তু যাদের জন্যে ঐ শ্লোকটা লেখা তাদের সঙ্গে আলাপে ‘সাববেলা’ শব্দটা বেখাপ। ‘বলিয়া’র জায়গায় ‘বসি’ আমরা বলি নে । যে শ্রেণীর লোকের ভাষায় লেগে’ শব্দের ব্যবহার চলে তাদের খুশি করবার জন্যে দিগধু কখনো তারার মালা গাথেই না । ‘জন্তে'র পরিবর্তে 'লাগি বা ‘লাগিয়া’ কিংবা ‘তরে’ শব্দটা ছন্দের মধ্যস্থতায় ছাড়া ভদ্রনামধারীদের রসনায় প্রবেশ পায় না । যেমতি তেমতি নেহারো উড়িলা হেরো মোরে পানে যবে হেথা সেথা নারে তারে প্রভৃতি শব্দ পদ্যের ফরমাশি । যদি বর্ষার দিনে বন্ধু এসে কথা জুড়ে দেয় ‘হেরো ঐ পুব দিকের পানে, রহি রহি বিজুলি চমক দেয়, মোর ডর লাগে, নাহি জানি কী লাগি সাধ যায় তোমা সনে এক বলি মনের কথা করি কানাকানি, তবে এটাকে মধুরালাপের ভূমিকা বলে কেউ মনে করবে না, বন্ধুর জন্তে উদবিগ্ন হবে। তৰু মন ভোলাবার ব্যবসায়ে পন্ত যদি সাদা ভাষার বাজে মালমশলা মেশায় তবে তাকে মাপ করা যায়, কিন্তু চলতি ব্যবহারে গদ্য যদি হঠাৎ সাধু হয়ে ওঠে তবে মহাপণ্ডিতেরাও মনে করবে, বিদ্রুপ করা হচ্ছে । কারও মাসির পরে বিশেষ সন্মান দেখাবার জন্যে কেউ যদি বিশুদ্ধ সাধু ভাষায় বলে 'আপনকার মাতৃস্বলা আশা করি দুঃসাধ্য অতিসার ব্যাধি হইতে আরোগ্যলাভ করিয়াছেন, তবে বোনপো ইংরেজের মুখে শুনলে মনে মনে হাসবে, বাঙালির মুখে শুনলে উচ্চহাস্ত ক’রে উঠবে।