পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষড়্‌বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8>br ब्रदौट्ज़-ब्रफ़नांरुलौ নিয়মে তখনি সেটা প্রাকৃত রূপ ধরবে। ফলে হয়েছে, আমরা লিখি এক আর পড়ি জার। অর্থাৎ আমরা লিখি সংস্কৃত ভাষায়, আর ঠিক সেইটেই পড়ি প্রাকৃত বাংলা डॉयांझे । ষ ফলার উচ্চারণ বাংলায় কোথাও সম্মানিত হয় নি, কিন্তু এক কালে বাংলার ক্রিয়াপদে পথ হারিয়ে সে স্থান পেয়েছিল। ‘খাইল’ ‘আইল’ শব্দের ‘খাল্য’ 'আল্য’ রূপ প্রাচীন বাংলায় দেখা গিয়েছে। ইকারটা শম্বের মাঝখান থেকে ভ্ৰষ্ট হয়ে শেষকালে গিয়ে পড়াতে এই ইঅ’র স্বষ্টি হয়েছিল । বাংলার অন্ত প্রদেশে এই যফলা-আকারের অভাব নেই, যেমন 'মায়্যা মাহুষ’ । বাংলা সাধু ভাষার অসমাপিকা ক্রিয়াপদে যফলা-আকার ছদ্মবেশে আছে, যেমন : হইয়া খাইয়া । প্রাচীন পুথিতে অনেক স্থলে তার বানান দেখা যায় : হয়্যা খায়্যা । সম্প্রতি একটা প্রশ্ন আমার কাছে এসেছে । "যাওয়া খাওয়া পাওয়া দেওয়া নেওয়া’ ধাতু যেতে খেতে পেতে দিতে নিতে আকার নিয়ে থাকে, কিন্তু ‘গাওয়া বাওয়া চাওয়া কওয়া বওয়া' কেন তেমনভাবে হয় না "গেতে বেতে চেতে ক’তে ব'তে’ । এর যে উত্তর আমার মনে এসেছে সে হচ্ছে এই যে, যে ধাতুতে হ’এর প্রভাব আছে তার ই লোপ হয় না । 'গাওয়া’র হিন্দি প্রতিশব্দ “গাহনা’, ‘চাওয়া’র চাহনা, “ক ওয়া'র কহনা । কিন্তু ‘খানা দেনা লেনা’র মধ্যে হ নেই । ‘বাহন’ থেকে ‘বা ওয়া’, সুতরাং তার সঙ্গে হ’এর সম্বন্ধ আছে। ‘ছাদন’ ও ‘ছাওয়া’র মধ্যপথে বোধকরি 'ছাহন’ ছিল, তাই 'ছাইতে’র জায়গায় ‘ছেতে হয় না । স্বরবর্ণের অমুরাগ-বিরাগের সূক্ষ্ম নিয়মভেদ এবং তার স্বৈরাচার কৌতুকজনক । ংস্কৃত উচ্চারণে যে নিয়ম চলেছিল প্রাকৃতে তা চলল না, আবার নানা প্রাকৃতে নানা উচ্চারণ। বাংলা ভাষা কয়েক শো বছর আগে যা ছিল এখন তা নেই। এক ভাষা ব’লে চেনাই শক্ত। আগে বলত ‘পড়ই', এখন বলে ‘পড়ে ; ‘হোহু’ হয়ে গেছে ‘হও’ ; ‘আমহি হল ‘আমি’ , ‘বাম্হন হল ‘বামুন ; এই বদল হওয়ার ক্টোক বহু লোককে আশ্ৰয় ক’রে এমন স্বতোবেগে চলছে যেন এ সজীব পদার্থ। হয়তো এই মুহূর্তেই আমাদের উচ্চারণ তার কক্ষপথ থেকে অতি ধীরে ধীরে সরে যাচ্ছে । ফ হচ্ছে f, ভ হচ্ছে ব, চ হচ্ছে স, এখনো কানে স্পষ্ট ধরা পড়ছে না । যে প্রাচীন প্রাকৃতের সঙ্গে বাংলা প্রাকৃতের নিকটসম্বন্ধ তার রঙ্গভূমিতে জানামের স্বরবর্ণগুলি জন্মাস্তরে কী রকম লীলা করে এসেছে তার অঙ্কুসরণ করে এলে অপভ্রংশের কতকগুলি বাধা রীতি হয়তো পাওয়া যেতে পারে। কিন্তু সে পথের পথিক আমি নই ৷ খবর নিতে হলে যেতে হবে স্বনীতিকুমারের ঘারে।