পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষড়্‌বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪৬৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

sss n রবীন্দ্র-রচনাবলী দেওয়া হয়। ‘না’ শব্দের ক্রিয়াপদের রূপ বাংলা ভাষার আর-একটি বিশেষত্ব, যথা : আমি নই, তুমি নও, সে নয়, তিনি নন, আমি নেই, তুমি নেই, লে নেই, তিনি নেই ; হই নে, হও না, হন না, হয় নি, হন নি । বাংলা ক্রিয়াপদে নানারকম শব্দ-যোজনায় নানারকম ভঙ্গী। তার কতকগুলি সার্থক, কতকগুলি নিরর্থক । ক্রিয়াপদে এতরকম ইশারা বোধ হয় আর-কোনো ভাষায় নেই । পড়ল বা, করলে বা, শব্দে আশঙ্কার স্বচনা । কোনো ক্রিয়াবিশেষণ-যোগে এর ভাবটা প্রকাশ হতে পারত না । এতে যদি ইকার যোগ করা যায় তাতে আর-একরকম ভঙ্গী এসে পড়ে। হলই বা, করলই বা : এর ভঙ্গীতে স্বরের বৈচিত্র্য অস্থলারে ক্ষমাও বোঝাতে পারে, স্পর্ধাও বোঝাতে পারে, উপেক্ষাও বোঝাতে পারে । হল বুঝি, করল বুৰি, হল ব’লে, করল ব’লে - আসন্ন অপ্রিয়তার আশঙ্কা । হল যে, করল যে : উদবেগ । হল তো, করলে তো : অপ্রত্যাশিতের সম্বন্ধে বিস্ময় । আবার ওকেই প্রশ্নের স্বরে বদলিয়ে যদি বলা হয় ‘হল তো ?’ তা হলে জানানো হয় : এখন তো আর কোনো নালিশ রইল না ? হোক না, করুক না, হোকৃগে, করুকূগে, মরুকুগে ; ঔদাসীন্ত । হলই বা, করলই বা, নাই বা হল, নাহয় হল : স্পর্ধার ভাষা । হবে বা, হবেও ব’ : দ্বিধা এবং স্বীকার মিশিয়ে । হবেই হবে, করবেই করবে : স্বনিশ্চিত প্রত্যাশা। করতেই হবে, হতেই হবে, করাই চাই, হওয়াই চাই ; ইচ্ছার জোর প্রয়োগ । হলেই হল : অর্থাং হয় যদি তবে আর-কোনো তর্কের দরকার নেই । হোকৃগে ছাই, মরুকুগে ছাই ; প্রবল ঔদাস্ত । ২০ অব্যয় । বাংলা ভাষায় প্রশ্নস্থচক অব্যয় সম্বন্ধে পূর্বেই আলোচনা করেছি। প্রশ্নসূচক কি শব্দের অনুরূপ আর-একটি “কি আছে, তাকে দীর্ঘস্বর দিয়ে লেখাই কর্তব্য। এ অব্যয় নয়, এ সর্বনাম । এ তার প্রকৃত অর্থের প্রয়োজন সেরে মাঝে মাৰে খোচা দেবার কাজে লাগে, যেমন : কী তোমার ছিরি, কী-ৰে তোমার বুদ্ধি।