পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষড়্‌বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪৬৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাংলাভাষা-পরিচয় 88ዓ তিনটি আছে যোজক অব্যয় শস্য : এবং আর ও। এবং সংস্কৃত শৰ । এর প্রকৃত অর্থ ‘এইমতো' । ইংরেজি and শব্দের অর্থে কতদিন এর ব্যবহার চলেছে জানি নে । পুরোনো কাব্যসাহিত্যে এবং শব্দের দেখা পাই নি। আধুনিক কাব্যসাহিত্যেও এর ব্যবহার নেই বললেই হয় । খাটি বাংলা যোজক শব্দ ‘আর’, হিন্দি ‘ঔর’। সংস্কৃত ‘অপর’ শব্দ থেকে এর উদ্ভব । এবং’ শব্দ তার অর্থের অসংগতি সত্বেও পুরাতন ‘জার’কে সাধু ভাষা থেকে প্রায় তাড়িয়ে দিয়েছে। তাড়ানো সহজ হয়েছে তার প্রধান কারণ, স্বাভাবিক বাংলায় দ্বন্ধসমালেই যোজকের কাজ সারা হয়ে থাকে । আমরা বলি : হাতিঘোড়া লোকলঙ্কর নিয়ে রাজা চলেছেন । আমরা বলি : চৌকিটেবিল আয়না-আলমারিতে ঘর ঠাসা । ইংরেজিতে উভয় স্থলেই একটা aud as "from Bowl Al, qol : The king marches with his elephants, horses and soldiers | The room is full of chairs, tables, clothes racks and almirahs বাংলায় যদি বলি ‘রাস্তা দিয়ে চলেছে হাতি আর ঘোড়া', তা হলে বোঝাবে বিশেষ করে ওরাই চলেছে । "অরি’ শব্দের আরও কয়েকটি কাজ আছে, যেমন : আর কত খাবে : অর্থাৎ অতিরিক্ত আরও কত খাবে। আর তোমার সঙ্গে দেখা হবে না : অর্থাৎ পুনশ্চ দেখা হবে না । তোমাকে আর চালাকি করতে হবে না : এ একটা ভঙ্গিওয়ালা কথা । এই শব্দ থেকে ‘জার' শব্দটা বাদ দিলেও চলে, কিন্তু তাতে বাজ মরে যায় । সাহিত্যে ‘ও’ শব্দটা এবং’ শব্দের সমান পর্যায়ে চলেছে। কিন্তু চলতি ভাষায় ‘ও’ সংস্কৃত 'চ'এর মতে, যথা : আমি যাচ্ছি তুমিও যাবে, জ্যাঙ যায় ব্যাঙ যায় খলসে বলে আমিও যাব । এক কালে এই 'ও' ছিল ‘হ’ রূপে, যেমন : লেহ, এহু বাহ, এহ তো মানুষ নয়। এই হ অবিকৃত রূপে বাকি আছে সাধু ভাষায় 'কেছ’ শব্দে। চলতি ভাষায় ‘কেও’ থেকে ক্রমে ‘কেউ হয়েছে। পুরাতন সাহিত্যে 'কেছ’ পাওয়া যায়, তেঁহ’ শব্দটা আজ হয়েছে ‘তিনি’। ‘ওছ নেই কিন্তু সাধু ভাষায় উছা আছে ৷ ‘ষেহ নেই, আছে ‘বাহা’। এই শেষ ছুটি বিশেষণ অপ্রাণী সম্পর্কে। যোজক 'ও'র উৎপত্তি ফালি উজ ( অস্ত্যস্থ ব ) শব্দ থেকে, সুতরাং and’এর প্রতিশবারূপে এর ব্যবহার অবৈধ নয়। কিন্তু তবু ভাষায় ভালো করে মিশ খায় নি। তুমি ও আমি একসঙ্গেই যাব ; এ খাটি বাংলা নয়। আমরা সহজে বলি : তুমি আমি ՀՆ|Հթ