পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষড়্‌বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৫২৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

द्रौठ-ब्रळ्नावलौ ن .4 সাক্ষ্যদাতার মতো বাড়াইয়া বলে। সংযম আশ্রয় করিতে তাহার সাহস হয় না। আমাদের দেশের রঙ্গমঞ্চে প্রত্যহই মিথ্যাসাক্ষীর সেই গলদঘর্ম ব্যায়াম দেখা যায়। কিন্তু, এ সম্বন্ধে চূড়ান্ত দৃষ্টান্ত দেখিয়াছিলাম বিলাতে। সেখানে বিখ্যাত অভিনেতা আভিঙের হামলেট ও ব্রাইড অফ লামারমুর দেখিতে গিয়াছিলাম। আভিঙের প্রচণ্ড অভিনয় দেখিয়া আমি হতবুদ্ধি হইয়া গেলাম। এরূপ অসংযত আতিশয্যে অভিনেতব্য বিষয়ের স্বচ্ছতা একেবারে নষ্ট করিয়া ফেলে ; তাহাতে কেবল বাহিরের দিকেই দোলা দেয়, গভীরতার মধ্যে প্রবেশ করিবার এমন বাধা তো আমি আর কখনো দেখি नांझे । আর্ট-জিনিসটাতে সংযমের প্রয়োজন সকলের চেয়ে বেশি। কারণ, সংষমই অন্তরলোকে প্রবেশের সিংহদ্বার। মানবজীবনের সাধনাতেও, র্যাহারা আধ্যাত্মিক সত্যকে উপলব্ধি করিতে চান তাহারাও বাহ উপকরণকে সংক্ষিপ্ত করিয়া সংযুমকে আশ্রয় করেন। এইজন্ত আত্মার সাধনায় এমন একটি অদ্ভূত কথা বলা হইয়াছে : ত্যক্তেন ভুঞ্জীথা । ত্যাগের দ্বারা ভোগ করিবে । আর্টেরও চরম সাধনা জুমার সাধনা । এইজন্ত প্রবল আঘাতের দ্বারা হৃদয়কে মাদকতার দোলা দেওয়া আর্টের সত্য ব্যবসায় নহে। সংযমের দ্বারা তাহা আমাদিগকে অন্তরের গভীরতার মধ্যে লইয়া যাইবে, এই তাছার সত্য লক্ষ্য । ধাহা চোখে দেখিতেছি তাহাকেই নকল করিবে না, কিম্বা তাহারই উপর খুব মোটা তুলির দাগ বুলাইয়া তাহাকেই অতিশয় করিয়া তুলিয়া আমাদিগকে ছেলে-ভুলাইবে না। . এই প্রবলতার ঝোক দিয়া আমাদের মনকে কেবলই ধাক্কা মারিবার চেষ্টা যুরোপীয় আর্টের ক্ষেত্রে সাধারণত দেখিতে পাওয়া যায় । মোটের উপর যুরোপ বাস্তবকে ঠিক বাস্তবের মতো করিয়া দেখিতে চায় । এইজন্ত যেখানে ভক্তির ছবি আঁকা দেখি সেখানে দেখিতে পাই, হাত দুখানি জোড় করিয়া মাথা আকাশে তুলিয়া চোখের তারা দুটি উলটাইয়া ভক্তির বাহ ভঙ্গিমা নিরতিশয় পরিস্ফুট করিয়া আঁকা। আমাদের দেশে যে-সকল ছাত্র বিলাতি আর্টের নকল করিতে যায় তাহারা এইপ্রকার ভঙ্গিমার পন্থায় ছুটিয়াছে। তাহারা মনে করে, বাস্তবের উপর জোরের সঙ্গে ক্টোক দিলেই যেন আর্টের কাজ স্বসিদ্ধ হয়। এইজন্ত নারদকে আঁকিতে গেলে তাহারা বাজার দলের "নারদকে আঁকিয়া বলে— কারণ, ধ্যানের দৃষ্টিতে দেখা তো তাহাজের সাধন নছে ; ৰাজার দলে ছাড়া আর তো কোথাও তাহারা নারদকে দেখে নাই। আমাদের দেশে বৌদ্ধযুগে একলা গ্ৰীৰ শিল্পীরা তাপল বুদ্ধের মূর্তি গড়িয়াছিল। তাছা উপবালজীর্ণ রুশ শরীরের যথাযথ প্রতিরূপ ; তাহাতে পাজয়ের প্রত্যেক হাড়টির