পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষড়্‌বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৫৩০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

હઝર রবীন্দ্র-রচনাবলী নিয়মকে নতজাস্থ হইয়া শিরোধাৰ করিয়া লয়। কিন্তু, যেখানে সে বাধ্য নয়, যেখানে কেবল নিজের খাতিরেই নিয়ম স্বীকার করিতে হয়, দুর্বলতা সেইখানেই নিয়মকে ফাকি দিয়া নিজেকে ফাকি দেয় । সেখানেই তাহার সমস্ত কুঞ্জ ও যদৃচ্ছাকৃত । ষে দেশে মানুষকে বাহিরের শাসন চালনা করিয়া আলিয়াছে, যেখানেই মাছুষের স্বাধীন শক্তিকে মানুষ শ্রদ্ধা করে নাই এবং রাজা গুরু ও শাস্ত্র বিনা যুক্তিতে মানুষকে তাহার হিতসাধনে বলপূর্বক প্রবৃত্ত করিয়াছে, সেখানেই মানুষ আত্মশক্তির আনন্দে নিয়মপালনের স্বাভাবিক প্রবৃত্তি হইতে বঞ্চিত হইয়াছে। মানুষকে বাধিয়া কাজ করানো একবার অভ্যাস করাইলেই, বঁাধন কাটিয়া আর তাহার কাছে কাজ পাওয়া যায় না । এইজন্ত যেখানে আমরা নিয়ম মানি লেখানে দাসের মতো মানি, যেখানে মানি না সেখানে দাসের মতোই ফাকি দিই। সেইজন্ত ধখন আমাদের সমাজের শাসন ছিল তখন জলাশয়ে জল, চতুষ্পাঠীতে শিক্ষা, পান্থশালায় আশ্রয় সহজে মিলিত ; যখন সামাজিক বাহ শাসন শিথিল হইয়াছে তখন আমাদের রাস্তা নাই, ঘাট নাই, জলাশয়ে জল নাই, সাধারণের অভাব দূর ও লোকের হিতসাধন করিবার কোনো স্বাভাবিক শক্তি কোথাও উদবোধিত হইয়া কাজ করিতেছে না। হয় আমরা দৈবকে নিন্দা করিতেছি নয় সরকার-বাহাদুরের মুখ চাহিয়া আছি । কিন্তু, এ-সকল বিষয়ে কোনটা যে কার্ধ এবং কোনটা কারণ তাহ ঠাহর করিয়া বলা শক্ত। যাহারা বাহিরে নিয়মকে অবাধে পৃথল করিয়া পরে বাহিরের নিয়ম তাহাদিগকেই বাধে ; যাহারা নিজের শক্তির প্রাবলো সে নিয়মকে কোনোমতেই অন্ধভাবে স্বীকার করিতে পারে না তাহারাই আপনার আনন্দে আপনার নিয়মকে উদ্ভাবিত করিবার অধিকার লাভ করে। নতুবা, এই অধিকারকে হাতে তুলিয়া দিলেই ইহাকে ব্যবহার করা যায় না। স্বাধীনতা বাহিরের জিনিল নহে* ভিতরের জিনিস, সুতরাং তাহা কাহারও কাছ হইতে চাহিয়া পাইবার জো নাই। যতক্ষণ নিজের স্বাভাবিক শক্তির দ্বারা আমরা সেই স্বাধীনতাকে লাভ না করি ততক্ষণ নানা আকারে বাহিরের শাসন আমাদের চোখে ঠুলি দিয়া ও গলায় দড়ি বাধিয়া চালনা করিবেই। ততক্ষণ আমরা মুখে যাহাই বলি, কাজের বেলায় আপনি আপনা হইতেই যেখানে হযোগ পাইব সেখানেই জন্যের প্রতি অনুশাসন প্রবর্তিত করিতে চাৰি । রাষ্ট্রনৈতিক অধিকার-লাভের বেলায় যুরোপীয় ইতিহাসের বচন আওড়াইৰ, জার সমাজনৈতিক গৃহনৈতিক ক্ষেত্রে কেবলই জ্যেষ্ঠ ৰিনি তিনি কনিষ্ঠের ও প্রবল विनि তিনি দুর্বলের অধিকারকে সংকুচিত করিতে থাকিব। আমরা যখন কাহারও ভালো করিতে চাহিব সে আমারই নিজের মতে, আমারই নিজের নিয়মে বাহার ভালো,