পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষড়্‌বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৬৪০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

७२२ * রবীন্দ্র-রচনাবলী ফুল তুলে এনে ফুলদানিতে সাজিয়ে দিত। আমার মাথায় খেয়াল গেল ফুলের রঙিন রস দিয়ে কবিতা লিখতে। টিপে টিপে যে রসটুকু পাওয়া যায় লে কলমের মুখে উঠতে চায় না। ভাবতে লাগলুম, একটা কল তৈরি করা চাই। ছেদাওয়ালা একটা কাঠের বাটি, আর তার উপরে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে চালাবার মতো একটা হামানদিস্তের নোড়া হলেই চলবে। সেটা ঘোরানো যাবে দড়িতে-বাধা একটা চাকায় । জ্যোতিদাদাকে দরবার জানালুম। হয়তো মনে মনে তিনি হাসলেন, বাইরে সেটা ধরা পড়ল না। হুকুম করলেন, ছুতোর এল কাঠকোঠ নিয়ে। কল তৈরি হল। ফুলে-ভরা কাঠের বাটিতে দড়িতে-বাধা নোড়া যতই ঘোরাতে থাকি ফুল পিষে কাদা হয়ে যায়, রস বেরয় না। জ্যোতিদাদা দেখলেন, ফুলের রস আর কলের চাপে ছন্দ মিলল না। তবু আমার মুখের উপর হেসে উঠলেন না। জীবনে এই একবার এঞ্জিনিয়ারি করতে নেবেছিলুম। যে যা নয় নিজেকে তাই যখন কেউ ভাবে তার মাথা হেট করে দেবার এক দেবতা তৈরি থাকেন, শাস্ত্রে এমন কথা আছে। সেই দেবতা সেদিন আমার এঞ্জিনিয়ারির দিকে কটাক্ষ করেছিলেন, তার পর থেকে যন্ত্ৰে হাত লাগানো আমার বন্ধ, এমন-কি সেতারে এসরাজেও তার চড়াই নি। * জীবনস্মৃতিতে লিখেছি, ফ্লাটলা কোম্পানির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাংলাদেশের নদীতে স্বদেশী জাহাজ চালাতে গিয়ে কী করে জ্যোতিদাদা নিজেকে ফতুর করে দিলেন। বৌঠাকরুনের মৃত্যু হয়েছে তার আগেই। - জ্যোতিদাদা তার তেতালার বালা ভেঙে চলে গেলেন । শেষকালে বাড়ি বানালেন রাচির এক পাহাড়ের উপর ॥৩ ১২ এইবার তেতলা ঘরের আর এক পালা আরম্ভ হল আমার সংসার নিয়ে। •• একদিন গোলাবাড়ি, পালকি, আর তেতলার ছাদের খালি ঘরে আমার ছিল যেন বেদের বাসা- কখনো এখানে, কখনো ওখানে। বৌঠাকরুন এলেন ছাদের ঘরে বাগান দিল দেখা। উপরের ধরে এল পিয়ানো নতুন নতুন স্বরের ফোয়ার ছুটল । i. * ১ জষ্টব্য ১৯-সংখ্যক কবিতা –জন্মদিলে । রবীক্স-রচনাবলী, পঞ্চবিংশ থও ২ ৮ বৈশাখ, ১২৯১ • পাৰিম, রিমোৱাৰাণী পাহাড়