পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষড়্‌বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৭৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ఆS রবীন্দ্র-রচনাবলী মুখ দিয়ে বেরিয়ে পড়েছে। গুরুজি বলে দিয়েছেন, মাওক্য উপনিষদের ডাকটাই হচ্ছে ব্যাঙের ডাক । অন্তরাত্মা চরম অবস্থায় নাভৗগহবরে প্রবেশ করে হয়ে পড়েন কৃপমওক, চার দিকের কিছুতেই আর নজর পড়ে না। তখনি পেটের মধ্যে কেবলই শিবোহং শিবোহং শিবোহং করে নাড়িগুলো ডাক ছাড়তে থাকে। সেই ঘুমেতে কী গভীর আনন্দ লে আমিই জানি— যোগনিজ একেই বলে । হৈম। একদিন মিন্ত কেঁদে উঠে ওঁর সেই ব্যাঙডাকা ঘুম ভাঙিয়ে দিতেই তাকে মেরে খুন করেন আর কি । পুষ্প। ফকিরদা, সংস্কৃতে অনার্স নিয়েছিলুম, আমাকে পড়তে হয়েছিল মাওক্যের কিছু কিছু। নাকের মধ্যে গোলমরিচের গুড়ে দিয়ে হেঁচে হেঁচে ঘুম ভাঙিয়ে রাখতে হত । হাচির চোটে নিরেট ব্রহ্মজ্ঞানের বারো আনা তরল হয়ে নাক দিয়েই বেরিয়ে গিয়েছিল। ইড়াপিঙ্গলা রইল বেকার হয়ে । অভাগিনী আমি, গুরুর ফুয়ের জোরে অজ্ঞানসমুদ্র পার হতে পারলেম না। ফকির। ( ঈষৎ হেলে ) অধিকারভেদ আছে । পুপ। আছে বই-কি। দেখো-না, ঐ শাস্ত্ৰেই ঋষি কোন-এক শিষ্ণুকে দেখিয়ে বলেছেন, সোয়মাত্মা চতুষ্পাং– এর আত্মাটা চার-পা-ওয়ালা। অধিকারভেদকেই তো বলে দু-পা চার-পায়ের ভেদ। হৈম, রাত্রে তো ব্যাঙের ডাক শুনে জেগে থাকিস, আর কোনো জাতের ডাক শুনিল কি দিনের বেলায় । হৈম। কী জানি ভাই, মিস্ত দৈবাং ওঁর মন্ত্রপড়া জলের ঘটি উলটিয়ে দিতেই উনি যে হাক দিয়ে উঠেছিলেন সেটা— পুষ্প । হা, সেটা চারপেয়ে ডাক । মিলছে এই শাস্ত্রের সঙ্গে । ফকির। সোহং ব্রহ্ম, সোহং ব্রহ্ম, সোহং ব্রহ্ম । পুপ। ফকিরদ, তপস্তা যখন ভেঙেছিল শিব এসেছিলেন তার বরদাত্রীর কাছে— তোমার তপস্তা এবার গুটিয়ে নাও ; এই দেখো, বরদাত্রী অপেক্ষা করে আছেন লালপেড়ে শাড়িখানি পরে । হৈমবতী । পুপদিদি, বরদাত্রীর জন্যে ভাবনা নেই ; পাড় দেখা দিচ্ছে রঙ বেরঙের । পুষ্প। বুঝেছি, গেরুয়া রঙের ছটা বুঝি ঘরের দেয়াল পেরিয়ে বাইরে ছড়িয়ে পড়েছে ? হৈমবর্তী। এরই মধ্যে আসতে আরম্ভ করেছেন দুটি একটি করে বরদাত্রী। গেরুয়া রঙের নেশা মেয়েরা সামলাতে পারে না । পোড়াকপালীদের মরণদশা আয় { = قي i