পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষড়্‌বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৮২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

e রবীন্দ্র-রচনাবলী হিসাবের খাতা নাড় ব’সে ব’লে, মহাজনে নেয় স্থদ কযে কষে— থাটি ষেই জন সেই মহাজনে কেন থাক হায় জুলিতে, দিন চলে যায় ট্যাকে টাকা হায় কেবলি খুলিতে তুলিতে । গুরু। কী নিতাই, চুপ করে বলে বলে মাথা চুলকোচ্ছ যে ? মন খারাপ হয়ে গেছে বুঝি ! আচ্ছা, এই নে, পায়ের ধুলো নে । নিতাই। তা, গুরুর কাছে মিথ্যে কথা বলব না। খুবই ভাবনা আছে মনে । কাল সারারাত ধস্তাধস্তি করে স্ত্রীর বাক্স ভেঙে বাজুবন্দজোড়া এনেছি। শুরু । এনেছ, তবে আর ভাবনা কী । নিতাই। প্রভো, ভাবনা তো এখন থেকেই । বউ বলেছে, ঘরে যদি ফিরি তবে বঁাটাপেটা করে দূর করে দেবে। গুরু । সেজন্তে এত ভয় কেন । নিতাই । এ মারটা প্রভুর জানা নেই, তাই বলছেন। গুরু । নারদসংহিতায় বলে, দাম্পত্যকলহে চৈব— ঝগড়া দুদিনে যাবে মিটে । নিতাই। ঐ নারীটিকে চেনেন না। সীতা সাবিত্রীর সঙ্গে মেলে না । নাম দিয়েছি হিড়িম্বা। তা, বরঞ্চ যদি অনুমতি পাই তা হলে দ্বিতীয় সংসার করে শাস্তিপুরে বাসা বধিব । o গুরু। দোষ কী ! বশিষ্ঠ প্রভৃতি ঋষিরা বলেছেন, অধিকন্তু ন দোষায় । সেইরকম দৃষ্টান্তও দেখিয়েছেন । পুরুষের পক্ষে স্ত্রী গৌরবে বহুবচন । মাধব । তার মানে একাই এক সহস্ৰ । গুরু। উণ্টো । আধ্যাত্মিক অর্থে পুরুষের পক্ষে এক সহস্রষ্ট একা। বড়ো বড়ো সজ্জন কুলীন বহু কষ্টে তার প্রমাণ দিয়েছেন। সেই জন্তেই এ দেশকে বলে পুণ্যভূমি— পুণ্যবিবাহকৰ্মে আমাদের পুরুষদের ক্লাস্তি নেই। মাধব । আহা, এ দেশের আধ্যাত্মিক বিবাহের এমন স্বন্দর ব্যাখ্যা আর কখনো শুনি নি । গুরু। কী গো বিপিন, প্রস্তুত তো? যেমন বলেছিলুম, কাল তো সারারাত জপ করেছিলে— লোনা মিথ্যে, সোনা মিথ্যে, সব ছাই, সব ছাই ? বিপিন। জপেছি। মোহরটা আরো যেন তারার মতো জল জল করতে লাগল