পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২২৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ミ>ペ রবীন্দ্র-রচনাবলী মহিম মনে মনে কহিল, “এইবার ময়রার দোকানে সন্দেশ এবং গল্পলার দোকানে দই-ক্ষীর ফরমাশ দিতে পারি। গোরা অবসরক্রমে বিনয়কে কহিল, “শশিমুখীর সঙ্গে তোমার বিবাহের জন্য দাদা র পীড়াপীড়ি আরম্ভ করেছেন। এখন তুমি কী বল ?” বিনয় । আগে তোমার কী ইচ্ছা সেইটে বলে । গোরা । আমি তো বলি মন্দ কী ! বিনয় । আগে তো তুমি মন্দই বলতে ! আমরা দুজনের কেউ বিয়ে করব না এ তো একরকম ঠিক হয়েই ছিল । গোরা। এখন ঠিক করা গেল তুমি বিয়ে করবে আর আমি করব না । বিনয় । কেন, এক যাত্রায় পৃথক ফল কেন ? গোরা । পৃথক ফল হবার ভয়েই এই ব্যবস্থা করা যাচ্ছে । বিধাতা কোনো কোনো মানুষকে সহজেই বেশি ভার গ্রস্ত করে গড়ে থাকেন, কেউ বা সহজেই দিব্য ভারহান— এই উভয় জীবকে একত্রে জুড়ে চালাতে গেলে এদের একটির উপর বাইরে থেকে বোঝ চাপিয়ে দুজনের ওজন সমান করে নিতে হয় । তুমি বিবাহ করে একটু দায়গ্ৰস্ত হলে পর তোমাতে অামাতে সমান চালে চলতে পারব | বিনয় একটু হাসিল এবং কছিল, “যদি সেই মংলব হয় তবে এই দিকেই বাটপারটি W5 চাপাও 17 গোরা । বাটখারাটি সম্বন্ধে আপত্তি নেই তে ? বিনয় । ওজন সমান করবার জন্তে যা হাতের কাছে আসে তাতেই কাজ চালানো যেতে পারে । ৪ পাথর হলেও হয়, ঢেলা হলেও হয়, যা খুশি । গোরা ষে বিবাহ-প্রস্তাবে কেন উৎসাহ প্রকাশ করিল তাহা বিনয়ের বুঝিতে বাকি রহিল না। পাছে বিনয় পরেশবাবুর পরিবারের মধ্যে বিবাহ করির বসে গোরার মনে এই সন্দেহ হঠয়াছে অম্লমান করিয়া বিনয় মনে মনে হাসিল । এরূপ বিবাহের ংকল্প ও সস্তাবনা তাহার মনে এক মুহূর্তের জন্যও উদিত হয় নষ্ঠ । এ যে হইতেই পারে না। দাই হোক, শশিমুর্থীকে বিবাহ করিলে এরূপ অদ্ভুত আশঙ্কার একেবারে মূল উৎপাটিত হইয়। যাইবে এবং তাহা হইলেক্ট উভয়ের বন্ধুত্বসম্বন্ধ পুনরায় স্বস্থ ও শান্ত হইবে ও পরেশবাবুদের সঙ্গে মেলামেশা করিতেও তাছার কোনো দিক হইতে কোনো সংকোচের কারণ থাকিবে না, এটা কথা চিন্তা করিয়া সে শশিমুীর সহিত বিবাহে সহজেই সম্মতি দিল । মধ্যাহ্নে আহারাস্তে রাত্রের নিদ্রার ঋণশোধ করিতে দিন কাটিয়া গেল। সেদিন দুই বন্ধুর মধ্যে আর কোনো কথা হইল না, কেবল