পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৮৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গোরা లగిశ్ర সঙ্গে বেরিয়ে পড়ে । ঈশ্বরকে সম্পূর্ণরূপে আত্মসমর্পণ করে তাকেই নিজের এক মাত্র সহায় করো— তা হলে ভুল ত্রুটি ক্ষতির মধ্যে দিয়েও লাভের পথে চলতে পারবে— আর যদি নিজেকে আধা-আধি ভাগ কর, কতক ঈশ্বরে কতক অন্তত্রে, তা হলে সমস্ত কঠিন হয়ে উঠবে। ঈশ্বর এই করুন, তোমার পক্ষে আমাদের ক্ষুদ্র আশ্রয়ের আর cशन ध८प्रॉखन नों एग्र ।” উপাসনার পরে উভয়ে বাহিরে আসিয়া দেখিলেন বসিবার ঘরে হারানবাবু অপেক্ষা করিয়া আছেন । স্বচরিতা আজ কাহারও বিরুদ্ধে কোনো বিদ্রোহভাব মনে রাখিৰে না পণ করিয়া হারানবাবুকে নম্রভাবে নমস্কার করিল । হারানবাবু তৎক্ষণাং চৌকির উপরে নিজেকে শক্ত করিয়া তুলিয়া অত্যস্ত গম্ভীর স্বরে কহিলেন, “স্বচরিত, এতদিন তুমি যে সত্যকে আশ্রয় করে ছিলে আজ তার থেকে পিছিয়ে পড়তে যাচ্ছ, আজ আমাদের শোকের দিন ।” স্বচরিতা কোনো উত্তর করিল না— কিন্তু যে রাগিণী তাহার মনের মধ্যে আজ শাস্তির সঙ্গে করুণা মিশাইয়া সংগীতে জমিয়া উঠিতেছিল তাহাতে একটা বেস্থর আসিয়া পড়িল । পরেশবাবু কছিলেন, “অন্তর্যামী জানেন কে এগোচ্ছে, কে পিছোচ্চে, বাইরে থেকে বিচার করে আমরা বৃথা উদবিগ্ন হই ।” হারানবাবু কহিলেন, “তা হলে আপনি কি বলতে চান আপনার মনে কোনো আশঙ্কা নেই ? আর আপনার অমৃত্যুপেরও কোনো কারণ ঘটে নি ?” পরেশবাবু কছিলেন, “পামুবাবু, কাল্পনিক আশঙ্কাকে আমি মনে স্থান দিই নে এবং অনুতাপের কারণ ঘটেছে কি না তা তখনই বুঝব যখন অনুতাপ জন্মাবে।” হারানবাবু কহিলেন, “এই-বে আপনার কন্যা ললিতা একলা বিনয়বাবুর সঙ্গে স্টিমারে করে চলে এলেন এটাও কি কাল্পনিক ?” স্বচরিতার মুখ লাল হইয়া উঠিল। পরেশবাবু কছিলেন, “পাল্লুবাবু, আপনার মন যে-কোনো কারণে হোক উত্তেজিত হয়ে উঠেছে, এই জন্তে এখন এ সম্বন্ধে আপনার সঙ্গে আলাপ করলে আপনার প্রতি অন্যায় করা হবে ।” হারানবাবু মাথা তুলিয়া বলিলেন, “আমি উত্তেজনার বেগে কোনো কথা বলি নে— আমি যা বলি সে সম্বন্ধে আমার দায়িত্ববোধ যথেষ্ট আছে ; সেজন্তে আপনি চিন্তা করবেন না । আপনাকে যা বলছি সে আমি ব্যক্তিগতভাবে বলছি নে, আমি ব্রাহ্মসমাজের তরফ থেকে বলছি— না বলা অন্তায় ব’লেই বলছি । আপনি যদি অন্ধ হয়ে না থাকতেন তা হলে, ওই-ধে বিনয়বাবুর সঙ্গে ললিত একলা চলে এল এই একটি ঘটনা থেকেই আপনি বুঝতে পারতেন আপনার এই পরিবার ব্রাহ্মসমাজের নোঙর 8