পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৯০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রবীন্দ্র-রচনাবলী "לףס যতদিন হরিমোহিনী বরদাসুন্দরীর কাছে অপমানিত হইতেছিলেন ততদিন স্বচরিতা তাহার অপমানের অংশ লইবার জন্য র্তাহার আচার গ্রহণ করিয়াছিল এবং আজ সেই অপমান হইতে যখন নিষ্কৃতির দিন উপস্থিত হইল তখন স্বচরিতা যে আচার সম্বন্ধে স্বাধীন হইতে দ্বিধা বোধ করিবে না, হরিমোহিনী তাহা ঠিক বুঝিতে পারেন নাই। হরিমোহিনী স্বচরিতাকে সম্পূর্ণ বুঝিয়া লন নাই, বোঝাও র্তাহার পক্ষে শক্ত ছিল । হরিমোহিনী স্বচরিতাকে স্পষ্ট করিয়া নিষেধ করিলেন না কিন্তু মনে মনে রাগ করিলেন। ভাবিতে লাগিলেন—'মা গো, মানুষের ইহাতে যে কেমন করিয়া প্রবৃত্তি হইতে পারে তাহা আমি ভাবিয়া পাই না । ব্রাহ্মণের ঘরে তো জন্ম বটে ! খানিকক্ষণ চুপ করিয়া থাকিয়া কহিলেন, "একটা কথা বলি বাছ, যা কর তা কর, তোমাদের ওই বেহারাটার হাতে জল খেয়ে না।” স্বচরিতা কহিল, “কেন মালি, ওই রামদীন বেহারাই তো তার নিজের গোরু দুইয়ে তোমাকে দুধ দিয়ে যায়।” হরিমোহিনী দুই চক্ষু বিস্ফারিত করিয়া কছিলেন, “অবাক করলি– দুধ আর জল এক হল !" সুচরিত হাসিয়া কহিল, “আচ্ছা মাসি, রামদীনের ছোওয়া জল আজ আমি খাব না। কিন্তু সতীশকে যদি তুমি বারণ কর তবে সে ঠিক তার উলটো কাজটি করবে।” হরিমোহিনী কহিলেন, “সতীশের কথা আলাদা ।” হরিমোহিনী জানিতেন পুরুষমানুষের সম্বন্ধে নিয়মসংযমের ক্রটি মাপ করিতেই झम्न ! 88 হারানবাবু রণক্ষেত্রে প্রবেশ করিলেন । আজ প্রায় পনেরো দিন হইয়া গিয়াছে ললিতা টীমারে করিয়া বিনয়ের সঙ্গে আলিয়াছে। কথাটা দুই-এক জনের কানে গিয়াছে এবং অল্পে অল্পে ব্যাপ্ত হইবারও চেষ্টা করিতেছে। কিন্তু সম্প্রতি দুই দিনের মধ্যেই এই সংবাদ শুকনো খড়ে আগুন লাগার মতো ছড়াইয়া পড়িয়াছে । ব্রাহ্মপরিবারের ধর্মনৈতিক জীবনের প্রতি লক্ষ রাখিয়া এই প্রকারের কদাচারকে ষে দমন করা কর্তব্য হারানবাবু তাহা অনেককেই বুঝাইয়াছেন। এ-সব কথা বুঝাইতেও বেশি কষ্ট পাইতে হয় না। যখন আমরা সত্যের অনুরোধে’ কর্তব্যের