পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৬১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রবীন্দ্র-রচনাবলী ج هوا সরু ধানের চিড়ে দেব পথে জল খেতে । চার মাগী দাসী দেব পায়ে তেল দিতে উড়কি ধানের মুড়কি দেব শাশুড়ি ভূলাতে । শেষ ছত্র দেখিলেই বিদিত হওয়া যায়, শাশুড়ি কিসে ভুলিবে এই পরম দুশ্চিন্তা তখনো সম্পূর্ণ ছিল । কিন্তু, উড়কি ধানের মুড়কি-দ্বারাই সেই দুঃসাধ্য ব্যাপার সাধন করা যাইত এ কথা যদি বিশ্বাসযোগ্য হয়, তবে নিঃসন্দেহ এখনকার অনেক কন্যার মাতা সেই সত্যযুগের জন্য গভীর দীর্ঘনিশ্বাস-সহকারে আক্ষেপ করিবেন। এখনকার দিনে কন্যার শাশুড়িকে যে কী উপায়ে ভুলাইতে হয়, কন্যার পিতা তাহা ইহজন্মেও ভুলিতে পারেন না । কন্যার সহিত বিচ্ছেদ একমাত্র শোকের কারণ নহে, অযোগ্য পাত্রের সহিত বিবাহ সেও একটা বিষম শেল। অথচ, অনেক সময় জানিয়া-শুনিয়া মা-বাপ এবং আত্মীয়েরা স্বার্থ অথবা ধন অথবা কুলের প্রতি দৃষ্টি করিয়া নিরুপায় বালিকাকে অপাত্রে উংসর্গ করিয়া থাকেন। সেই অন্যায়ের বেদনা সমাজ মাঝে মাঝে প্রকাশ করে । ছড়ায় তাহার পরিচয় আছে । কিন্তু পাঠকদের এ কথা মনে রাখিতে হইবে যে, ছড়ার সকল কথাই ভাঙাচোরা, হাসিতে কান্নাতে অদ্ভুতে মেশানে । ডালিম গাছে পর্ভু নাচে । তাকধুমাধুম বাদি বাজে । আয়ী গে| চিনতে পার ? গোটা দুই অন্ন বাড়ো । অন্নপূর্ণা’ দুধের সর। কাল যাব গো পরের ঘর ॥ পরের বেট মারলে চড় । কানতে কানতে খুড়োর ঘর । খুড়ে দিলে বুড়ে বর । হেই খুড়ে তোর পায়ে ধরি । খুয়ে আয়গা মায়ের বাড়ি ৷ মায়ে দিলে সরু শাখা, বাপে দিল শাড়ি । ভাই দিলে হুড়কে ঠেঙা চল শ্বশুরবাড়ি । তখন ইংরাজের আইন ছিল না। অর্থাৎ, দাম্পত্য অধিকারের পুনঃপ্রতিষ্ঠার ভার পাহারাওয়ালার হাতে ছিল না। স্বতরাং আত্মীয়গণকে উদযোগী হইয়া সেই