পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৬৭০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\9(KWუ রবীন্দ্র-রচনাবলী এ কথা শুনিয়া মাতা মনে মনে হাসে । শঙ্খ পরান জগৎপিতা মনের হরষে ॥ শাখারি ভালো দিলে শঙ্খ মানায়ে । ভাণ্ডার ভেঙে দেইগে তঙ্ক, লওগে গনিয়ে ॥ এতক্ষণে শাখারি সময় বুঝিয়া কহিল— আমি যদি তোমার শঙ্খের লব তঙ্ক জ্ঞেয়াত-মাঝারে মোর রহিবে কলঙ্ক ॥ ইহারা যে বংশের শাখারি তাহদের কুলাচার স্বতন্ত্র ; তাহদের বিষয়বুদ্ধি কিছুমাত্র নাই ; টাকাকড়ি সম্বন্ধে বড়ো নিম্পূহ ; ইহারা যাহাকে শাখা পরান তাহাকে পাইলেই মূল্যের আর কোনোপ্রকার দাবি রাখেন না। ব্যবসায়টি অতি উত্তম। কেমন কথা কও শাখারি কেমন কথা কও ৷ মানুষ বুঝিয় শাখারি এ-সব কথা কও ৷ শাখারি কহিল— না করো বড়াই দুর্গা না করে বড়াই । সকল তত্ত্ব জানি আমি এই বালকের ঠাই ॥ তোমার পতি ভাঙড় শিব তা তো আমি জানি । নিতি নিতি প্রতি ঘরে ভিক্ষা মাগেন তিনি ॥ ভস্মমাখা তায় ভূজঙ্গ মাথে অঙ্গে । নিরবধি ফেরেন তিনি ভূত-পেরেতের সঙ্গে । ইহাকেই বলে শোধ তোলা । নিজের সম্বন্ধে যে-সকল স্পষ্ট ভাষা মহাদেব সহধর্মিণীর মুখ হইতে মধ্যে মধ্যে শুনিয়া আসিয়াছেন, অদ্য স্বযোগমত সেই সত্য কথাগুলিই গৌরীর কানে তুলিলেন। এই কথা শুনি মায়ের রোদন বিপরীত । বাহির করতে চান শঙ্খ না হয় বাহির । পাষাণ আনিল চণ্ডী, শঙ্খ না ভাঙিল। শঙ্খেতে ঠেকিয়া পাষাণ খণ্ড খণ্ড হল । কোনোরূপে শঙ্খ যখন না হয় কর্তন খড়গ দিয়ে হাত কাটিতে দেবীর গেল মন । হস্ত কাটিলে শস্থে ভরিবে রুধিরে । রুধির লাগিলে শঙ্খ নাহি লব ফিরে ।