পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/২৯৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ՀԵr8 রবীন্দ্ৰ-রচনাবলী ওই পক্ষধ্বনি, শব্দময়ী অনুসর-রমণী গেল চলি স্তব্ধতার তপোভঙ্গ করি। উঠিল। শিহরি গিরিশ্ৰেণী তিমির-মগন, শিহরিল দেওদার-বন । মনে হল এ পাখার বাণী দিল আনি শুধু পলকের তরে পুলকিত নিশ্চলের অন্তরে অন্তরে । বেগের আবেগ । পর্বত চাহিল হতে বৈশাখের নিরুদ্দেশ মেঘ ; তরুশ্রেণী চাহে, পাখা মেলি মাটির বন্ধন ফেলি। ওই শব্দরেখা ধরে চকিতে হইতে দিশাহারা, আকাশের খুঁজিতে কিনারা । এ সন্ধ্যার স্বপ্ন টুটে বেদনার ঢেউ উঠে জাগি সুদূরের লাগি, হে পাখা বিবাণী । বাজিল ব্যাকুল বাণী নিখিলের প্রাণে— “হেথা নয়, হেথা নয়, আর কোনখানে ৷” হে হংস-বিলাকা, আজ রাত্রে মোর কাছে খুলে দিলে স্তব্ধতার ঢাকা । শুনিতেছি আমি এই নিঃশব্দের তলে শূন্যে জলে স্থলে অমনি পাখার শব্দ উদাম চঞ্চল । তৃণদল মাটির আকাশ-পরে ঝাপটিছে ডানা ; মাটির আঁধার-নীচে, কে জানে ঠিকানা, মেলিতেছে অঙ্কুরের পাখা লক্ষ লক্ষ বীজের বিলাকা । দেখিতেছি আমি আজি এই গিরিরাজি, । এই বন, চলিয়াছে উন্মুক্ত ডানায় দ্বীপ হতে দ্বীপান্তরে, অজানা হইতে অজানায় । নক্ষত্রের পাখার সম্পন্দনে চমকিছে অন্ধকার আলোর ক্ৰন্দনে ।