পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৩২৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

VSO রবীন্দ্র-রচনাবলী । পঞ্চক ৷ হবে না, আমার কিছুই হবে না। এখানকার একটা মন্ত্রও আমার খাটল না। 5iF দূরে কোথায় দূরে দূরে মন বেড়ায় গো ঘুরে ঘুরে যে বঁাশিতে বাতাস কাদে সেই বাঁশিটির সুরে সুরে । যে পথ সকল দেশ পারায়ে উদাস হয়ে যায় হারায়ে, সে পথ বেয়ে কঙাল পর্যান যেতে চায় কোন অচিন পুরে । ও কী ও ! কান্না শুনি যে ! এ নিশ্চয়ই সুভদ্র । আমাদের এই আয়তনে ওর চোখের জল আর শুকোল না। ওর কান্না আমি সইতে পারি। নে ! [প্ৰস্থান বালক সুভদ্রকে লইয়া পঞ্চকের পুনঃপ্রবেশ পঞ্চক । তোর কোনো ভয় নেই ভাই, কোনো ভয় নেই। তুই আমার কাছে বল, কী হয়েছে বল। সুভদ্র । আমি পাপ করেছি। পঞ্চক । পাপ করেছিস ? কী পাপ ? সুভদ্র । সে আমি বলতে পারব না ! ভয়ানক পাপ । আমার কী হবে । পঞ্চক। তোর সব পাপ আমি কেড়ে নেব, তুই বল। সুভদ্র । আমি আমাদের আয়তনের উত্তর দিকের— পঞ্চক । উত্তর দিকের ? সুভদ্র । হা, উত্তর দিকের জানলা খুলেপঞ্চক । জানলা খুলে কী করলি ? সুভদ্র । বাইরেটা দেখে ফেলেছিা! পঞ্চক । দেখে ফেলেছিস ? শুনে লোভ হচ্ছে যে ! সুভদ্র । হা পঞ্চকদাদা । কিন্তু বেশিক্ষণ না- একবার দেখেই তখনই বন্ধ করে ফেলেছি। কোন প্ৰায়শ্চিত্ত করলে আমার পাপ যাবে ? পঞ্চক । ভুলে গেছি ভাই। প্ৰায়শ্চিত্ত বিশ-পঁচিশ হাজার রকম আছে। আমি যদি এই আয়তনে না আসতুম তা হলে তার বারো-আনাই কেবল পুঁথিতে লেখা থাকত ; আমি আসার পর প্রায় তার সব-কটাই ব্যবহারে লাগাতে পেরেছি, কিন্তু মনে রাখতে পারি নি । է: বালীকদলের প্রবেশ প্রথম বালক । আঁ্যা, সুভদ্ৰ ! তুমি বুঝি এখানে ? দ্বিতীয় বালক । জািন পঞ্চকদাদা, সুভদ্র কী ভয়ানক পাপ করেছে ? পঞ্চক । চুপ চুপ । ভয় নেই। সুভদ্র । কঁদছিস কেন ভাই । ‘প্ৰায়শ্চিত্ত করতে হয় তো করবি ৷ প্ৰায়শ্চিত্ত করতে ভারি মজা । এখানে রোজই একঘেয়ে রকমের দিন কাটে, প্ৰায়শ্চিত্ত না থাকলে তো মানুষ টিকতেই পারত না । ] প্রথম বালক । (চুপি চুপি) জানি পঞ্চকদাদা, সুভদ্র উত্তর দিকের জানলা— পঞ্চক । আচ্ছা আচ্ছা, সুভদ্রের মতো তোদের অমন সাহস আছে ? দ্বিতীয় বালক । আমাদের আয়তনের উত্তর দিকটা যে একজটা দেবীর ।