পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৩৫৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অচলায়তন WOWOS পঞ্চক। আঃ দেখতে দেখতে কী মেঘ করে এল ! শুনিছ আচার্যদেব, বজের পর বাজ ! আকাশকে একেবারে দিকে দিকে দগ্ধ করে দিলে যে ! আচার্য। ঐ-যে নেমে এল বৃষ্টি— পৃথিবীর কত দিনের পথ-চাওয়া বৃষ্টি-- অরণ্যের কত রাতের স্বপ্ন-দেখা বৃষ্টি । পঞ্চক । মিটাল এবার মাটির তৃষ্ণা- এই যে কালো মাটি— এই যে সকলের পায়ের নিচেকার 5 আচার্য। বাবা, তোমাদের এ কী সমারোহ ! আজি এ কী কাণ্ড । প্রথম দৰ্ভক । বাবাঠাকুর, আজ তোমাদের নিয়েই সমারোহ। কখনো পাই নে, আজ পেয়েছি। দ্বিতীয় দৰ্ভক । আমরা তো শাস্ত্র কিছুই জানি নে- তোমাদের দেবতা আমাদের ঘরে আসে না । তৃতীয় দৰ্ভক। কিন্তু আজ দেবতা কী মনে করে অতিথি হয়ে এই অধমদের ঘরে এসেছেন। প্রথম দৰ্ভক । তাই আমাদের যা আছে তাই দিয়ে তোমাদের সেবা করে নেব । দ্বিতীয় দৰ্ভক । আমাদের মন্ত্র নেই বলে আমরা শুধু কেবল গান গাই । মাদল বাজাইয়া নৃত্যগীত উতল ধারা বাদল ঝরে, সকল বেলা এক ঘরে । সজল হাওয়া বহে বেগে, পাগল নদী উঠে। জেগে, তমালবনে আঁধার করে । ওগো বঁধু দিনের শেষে এলে তুমি কেমন বেশে । আঁচল দিয়ে শুকাব জল মুছাব পা আকুল কেশে । জ্বেলে দেব প্রেমের বাতি, চরণ রেখে তাহার ”পরে । আচাৰ্য । পঞ্চক, আমাদেরও এমনি করে ডাকতে হবে- বজরাবে যিনি দরজায় ঘা দিয়েছেন তাকে ঘরে ডেকে নাও- আর দেরি কোরো না । ভুলে গিয়ে জীবন মরণ লব তোমায় করে বরণ, করিব জয় শরীমত্ৰাসে বাধন বাধা যাবে জ্বলে, সুখদুঃখ দেব দলে, ঝড়ের রাতে তোমার সাথে বাহির হব। অভয় ভরে । সকলে । উতল ধারা বাদল ঝরে দুয়ার খুলে এলে ঘরে ।