পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৪২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8s२ রবীন্দ্র-রচনাবলী এবার আমাদের বসন্ত-উৎসবে এ কী রকম সুর লাগছে। এ যেন ঝরা পাতার সুর । ভেবেছিল আমরা বুঝতে পারব না, আমরা যে যৌবনে দুরন্ত । আমাদের কেবল হাসি দিয়ে ভুলোতে চেয়েছিল। কিন্তু আজ আমরা আমাদের মনকে মজিয়ে নেব। এই সমুদ্রপারের দীর্ঘনিশ্বাসে । প্রিয়া, এই পৃথিবী আমাদের প্রিয়া। এই সুন্দরী পৃথিবী। সে চাচ্ছে আমাদের যা আছে সমস্তই— আমাদের হাতের স্পর্শ, আমাদের হৃদয়ের গান চাচ্ছে যা আমাদের আপনার মধ্যে আপনার কাছ থেকেও লুকিয়ে আছে। ও যে কিছু পায় কিছু পায় না, এইজন্যেই ওর কান্না । পেতে পেতেই সব হারিয়ে যায়। ওগো পৃথিবী, তোমাকে আমরা ফাকি দেব না। 하R আমি যাব না গো আমনি চলে। মালা তোমার দেব গলে । অনেক সুখে অনেক দুখে তোমার বাণী নিলেম বুকে, ফাগুনশেষে যাবার বেলা আমার বাণী যাব বলে । ক্ষমা আমায় করবে না কি । গান এসেছে, সুর আসে নাই হল না যে শোনানো তাই, সে-সুর আমার রইল ঢাকা ୩୫୪ (ନୀ ଜୋନ ଔ( ! ও ভাই, কে যেন গেল বোধ হচ্ছে । আরে, গেল গেল গেল, এ ছাড়া আর তো কিছুই বোধ হচ্ছে না । আমার গায়ের উপর কোন পথিকের কাপড় ঠেকে গেল। g এই যে আমাদের বাউল। আমাদের এ কোথায় এনেছ, এখানে সমস্ত পথিক-জগতের নিশ্বাস আমাদের গায়ে লাগছে- সমস্ত তারাগুলোর । আমরা, খেলাচ্ছলে বেরিয়েছিলুম। কিন্তু খেলােটা যে কী তা ভুলেই গেছি। আমরা তাকেই ধরতে বেরিয়েছিলুম। পৃথিবীর মধ্যে যে বুড়ো । রাস্তায় সবাই বললে সে ভয়ংকর। সে কেবলমাত্র একটা মুণ্ডু, একটা হা, যৌবনের চাদকে গিলে খাবার জন্যেই তার একমাত্র লোভ। কিন্তু ভয় ভেঙে গেছে । মনের ভিতর বলছে সে যদি আমাকে চায়। তবে আমিও বসে থাকব না | ফুল যাচ্ছে, পাতা যাচ্ছে, নদীর জল যাচ্ছে—তাঁর পিছন পিছন আমিও যাব। ও ভাই বাউল, তোমার একতারাতে একটা সুর লাগাও । রাত কত হল কে জানে। হয়তো বা ভোর হয়ে এল ।