পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৪৩০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8Ss রবীন্দ্ৰ-রচনাবলী মরণ এবার আনলে আমার বরণ-ডালা । যৌবনেরই ঝড় উঠেছে আকাশ পাতালে । নাচের তালের বাংকারে তার আমায় মাতালে । কুড়িয়ে নেবার ঘুচল পেশা, উড়িয়ে দেবার লাগল নেশা, আরাম বলে, “এল আমার যাবার পালা ।” কিন্তু সে গেল কোথায় । বাউল । সে বললে, আমি পথ চেয়ে চুপ করে বসে থাকতে পারব না। আমি এগিয়ে গিয়ে ধরব। আমি জয় করে আনব । কিন্তু গেল কোন দিকে । বাউল । সেই গুহার মধ্যে চলে গেছে । সে কী কথা । সে যে ঘোর অন্ধকার । কোনো খবর না নিয়েই একেবারেবাউল । সে নিজেই খবর নিতে গেছে । ফিরবে। কখন । তুইও যেমন ! সে কি আর ফিরবে। কিন্তু চন্দ্ৰহাস গেলে আমাদের জীবনের রইল কী । আমাদের সর্দারের কাছে কী জবাব দেব । এবার সর্দারও আমাদের ছাড়বে। যাবার সময় আমাদের কী বলে গেল সে। বাউল। বললে, আমার জন্যে অপেক্ষা কোরো, আমি আবার ফিরে আসব। ফিরে আসবে ? কেমন করে জানিব । বাউল । সে তো বললে, আমি জয়ী হয়ে ফিরে আসব। তা হলে আমরা সমস্ত রাত অপেক্ষা করে থাকব । বাউল, কোথায় আমাদের অপেক্ষা করতে হবে । বাউল। এই-যে গুহার ভিতর থেকে নদীর জল বেরিয়ে আসছে। এরই মুখের কাছে। ঐ গুহায় কোন রাস্তা দিয়ে গেল। ওখানে যে কালো খাড়ার মতো অন্ধকার। বাউল । রাত্রের পাখিগুলোর ডানার শব্দ ধরে গেছে । তুমি সঙ্গে গেলে না কেন । বাউল। আমাকে তোমাদের আশ্বাস দেবার জন্যে রেখে গেল । কখন গেছে বলে তো । বাউল । অনেকক্ষণ-রাতের প্রথম প্ৰহরেই। এখন বোধ হয় তিন প্রহর পেরিয়ে গেছে। কেমন একটা ঠাণ্ডা হাওয়া দিয়েছে- গা সির সির করছে । w দেখ ভাই, স্বপ্ন দেখেছি যেন তিন জন মেয়েমানুষ চুল এলিয়ে দিয়ে— তোর স্বপ্নের কথা রেখে দে। ভালো লাগছে না। সব লক্ষণগুলো কেমন খারাপ ঠেকছে।