পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৪৬৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8 & R রবীন্দ্ৰ-রচনাবলী “নিজেই সব করবে ? ধন্য বীরাঙ্গনা । আর, কনেকে আশীর্বাদ ?” “সে আশীর্বাদের টাকাটা আমার নিজের পকেট থেকেই গেছে ।” “মাছের তেলেই মাছভাজা ? ভালো বোঝা গেল না ।” “এই নাও, বুঝে দেখো ।” বলে চিঠিখানা ওর হাতে দিলে । পড়ে। শশাঙ্ক হাে হাে করে হেসে উঠল । লিখছে : যে রিসার্চের দুরূহ কাজে নীরদ আত্মনিবেদন করতে চায়। ভারতবর্ষে তা সম্ভব নয়। সেইজন্যেই ওর জীবনে আর-একটা মস্ত স্যাক্রিাফাইস মেনে নিতে হল । উর্মির সঙ্গে বিবাহের সম্বন্ধ বিচ্ছিন্ন না করলে উপায় নেই। একজন য়ুরোপীয় মহিলা ওকে বিবাহ করে ওর কাজে আত্মদান করতে সম্মত । কিন্তু কাজটা সেই একই, ভারতবর্ষেই করা হােক আর এখানেই । রাজারামবাবু যে কাজের জন্য অর্থ দিতে চেয়েছিলেন তার কিয়দংশ সেখানে নিযুক্ত করলে অন্যায় হবে না। তাতে মৃতব্যক্তির 'পরে সম্মান করাই হবে। শশাঙ্ক বললে, “জীবিত ব্যক্তিটাকে কিছু কিছু দিয়ে যদি সেই দূরদেশেই দীর্ঘকাল জিইয়ে রাখতে পার তো মন্দ হয় না । টাকা বন্ধ করলে পাছে খিদের জ্বালায় মরিয়া হয়ে এখানে দৌড়ে আসে এই ভয় আছে ।” উর্মি হেসে বললে, “সে ভয় যদি তোমার মনে থাকে টাকা তুমিই দিয়ো, আমি এক পয়সাও (Mद कीं ।” শশাঙ্ক বললে, “আবার তো মন বদল হবে না ? মানিনীর অভিমান তো অটল থাকবে ?” “বদল হলে তোমার তাতে কী শশাঙ্কদা !” “প্রশ্নের সত্য উত্তর দিলে অহংকার বেড়ে যাবে, অতএব তোমার হিতের জন্যে চুপ করে রইলুম। কিন্তু ভাবছি, লোকটার গণ্ডদেশ তো কম নয়, ইংরেজিতে যাকে বলে চীক।” উর্মির মনের মধ্যে থেকে প্রকাণ্ড একটা ভার নেমে গেল— বহু দিনের ভার। মুক্তির আনন্দে ও কী যে করবে তা ভেবে পাচ্ছে না । ওর সেই কাজের ফর্দটা ছিড়ে ফেলে দিলে । গলিতে ভিক্ষুক দাড়িয়ে ভিক্ষা চাইছিল, জানলা থেকে আংটিটাি ছুড়ে ফেললে তার দিকে । জিজ্ঞাসা করলে, “এই পেনসিলের দাগ দেওয়া মোটা বইগুলো কি কোনো হকার কিনবে ।” “নাই যদি কেনে, তার ফলাফলটা কী আগে শুনি ।” “যদি ওর মধ্যে সাবেক কালের ভূতটা বাসা করে, মাঝে মাঝে অর্ধেক রাত্রে তর্জনী তুলে আমার বিছানার কাছে এসে দাড়ায় ।” “সে আশঙ্কা যদি থাকে হকারের অপেক্ষা করব না, আমি নিজেই কিনিব ।” “কিনে কী করবে। ” “হিন্দুশাস্ত্ৰমতে অন্ত্যেষ্টিসৎকার। গয়া পর্যন্ত যেতে রাজি, তাতে যদি তোমার মন সত্ত্বনা পায় ।” ‘ना, अठों बाएवांद्धि जश्व ना ।” “আচ্ছা, আমার লাইব্রেরির কোণে পিরামিড বানিয়ে ওদের মামি করে রেখে দেব ।” “আজ কিন্তু তুমি কাজে বেরোতে পাবে না।” ‘जभरद्ध नि १” “मभस्छ फ्रिन्छ ।” “কী করতে হবে।” । “মোটরে করে উধাও হয়ে যাব।” “দিদির কাছে ছুটি নিয়ে এসো গে।” “না, ফিরে এসে দিদিকে বলব, তখন খুব বকুনি খাব। সে বকুনি সইবে।” “আচ্ছা, আমিও তোমার দিদির বকুনি হজম করতে রাজি। টায়ার যদি ফাটে দুঃখিত হব না ।