পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষোড়শ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪২৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

श्रीक्लिनििस्कएक्लन 8〉為 ইচ্ছা বলে পদার্থের কোনো অর্থই থাকত না ; তা হলে ইচ্ছাই হ’ত না। সত্যকে চায় বলেই আমাদের ইচ্ছা । এমন-কি, আমাদের ইচ্ছা যখন অসম্ভবকে চায় তখনও তাকে সত্যরূপে পেতে চায়, অসম্ভব কল্পনার মধ্যে পেয়ে তার স্থখ নেই । তা হলে দেখতে পাচ্ছি, আমাদের বিশেষত্বের পক্ষে এমন একটি বিশ্বনিয়মের প্রয়োজন যে নিয়ম সত্য, অর্থাৎ যে নিয়ম আমার বিশেষত্বের উপর নির্ভর করে না । বস্তুত আমি আমাকেই সার্থক করবার জন্যেই বিশ্বকে চাই। এই বিশ্ব যদি আমারই ইচ্ছাধীন একটা মায়া-পদার্থ হয় তা হলে আমাকেই ব্যর্থ করে । আমারই জ্ঞান সার্থক বিশ্বজ্ঞানে, আমারই শক্তি সার্থক বিশ্বশক্তিতে, আমারই প্রেম সার্থক বিশ্বপ্রেমে । তাই যখন দেখছি তখন এ কথা কেমন করে বলব বিশ্ব যদি বিশ্বরূপে সত্য না হত, সে যদি আমারই বিশেষ ইচ্ছামুগত হয়ে স্বপ্নের মতো হত তা হলে ভালো হত ? তাহলে সে যে আমারই পক্ষে অনর্থকর হত। এইজন্যে আমরা দেপতে পাই, আমির মধ্যে যার আনন্দ প্রচুর সেই তার আমিকে বিশেষত্বের দিক থেকে বিশ্বের দিকে নিয়ে যায়। আপনার শক্তিতে যার আনন্দ সে কাজকে সংকীর্ণ করতে পারে না, সে বিশ্বের মধ্যে কাজ করতে চায় । তা করতে গেলেই বিশ্বের নিয়মকে তার মানতে হয় । বস্তুত এমন অবস্থায় বিশ্বের নিয়মকে মানার যে দুঃখ সেই দুঃখ সম্পূর্ণ স্বীকার করাতেই তার আনন্দ । সে কখনোই দুর্বলভাবে কান্নার স্বরে বলতে পারে না বিশ্ব কেন আপনার নিয়মে আপনি এমনি স্থির হয়ে অাছে, সে কেন আমার অনুগত হচ্ছে না । বিশ্ব আপনার নিয়মে আপনি স্থির হয়ে আছে বলেই মানুষ বিশ্বক্ষেত্রে কাজ করতে পারছে । কবি যখন নিজের ভাবের আনন্দে ভোর হয়ে ওঠেন তখন তিনি সেই আনন্দকে বিশ্বের আনন্দ করতে চান । তা করতে গেলেই আর নিজের খেয়ালমতো চলতে পারেন না। তখন তাকে এমন ভাষা আশ্রয় করতে হয় যা সকলের ভাষা, যা তার খেয়াল-মতো একেবারে উলটোপালটা হয়ে চলে না। তাকে এমন ছন্দ মানতেই হয় যে ছন্দে সকলের শ্রবণ পরিতৃপ্ত হয়, তিনি বলতে পারেন না আমার খুশি অামি ছন্দকে যেমন-তেমন করে চালাব । ভাগ্যে এমন ভাষা আছে যা সকলের ভাষা, ভাগ্যে ছন্দের এমন নিয়ম আছে যাতে সকলের কানে মিষ্ট লাগে, সেইজন্যেই কবির বিশেষ আনন্দ আপনাকে বিশ্বের আনন্দ করে তুলতে পারে। এই বিশ্বের ভাষা বিশ্বের নিয়মকে মানতে গেলে দুঃখ আছে, কেননা সে তোমাকে খাতির করে চলে না ; কিন্তু এই দুঃখকে কবি আনন্দে স্বীকার করে। সৌন্দর্যের যে নিয়ম বিশ্বনিয়ম তাকে সে নিজের রচনার মধ্যে কোথাও লেশমাত্র ক্ষুন্ন করতে চায় না; একটুও শৈথিল্য তার পক্ষে অসহ। কবি যতই বড়ো