পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষোড়শ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/২৬১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নীরজা। রোশনি। রোশনি। কী খোখী। নীরজা। কাল থেকে সরলাকে দেখছি নে কেন ? রোশনি। সে কী কথা, জান না, সরকার বাহাদুর যে তাকে পুলিপোলাও চালান দিয়েছে? নীবাজা। কেন, কী করেছিল ? রোশনি। দারোয়ানের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে বড়োলাটের মেমসাহেবের ঘরে ঢুকেছিল। নীরজা। কী করতে ? রোশনি। মহারানীর সীলমোহর থাকে যে-বাক্সোয় সেইটে চুরি করতে, আচ্ছা বুকের পটা! নীরজা। লাভ কী ? রোশনি। ঐ শোনো, সেটা পেলেই তো সব হল। লাটসাহেবের ফাসি দিতে পারত। সেই মোহরের ছাপেই তো রাজ্যিখন চলছে। নীরজা। আর ঠাকুরপো ? w রোশনি । সিধকাঠি বেরিয়েছে তার পাগড়ির ভিতর থেকে, দিয়েছে তাকে হরিণবাড়িতে, পাথর ভাঙাবে পচাশ বছর। আচ্ছা খোখী, একটা কথা জিজ্ঞাসা করি, বাড়ি থেকে যাবার সময় সরলাদিদি তার জাফরানি রঙের শাড়িখানা আমাকে দিয়ে গেল। বললে “তোমার ছেলের বউকে দিয়ে।” চোখে আমার জল এল, কম দুঃখ তো দিই নি ওকে। এই শাড়িটা যদি রেখে দিই কোম্পানির বাহাদুর ধরবে না তো ? নীরজা। ভয় নেই তোর। কিন্তু শিগগির যা বাইরের ঘরে খবরের কাগজ পড়ে আছে নিয়ে 5t3! { রোশনি কাগড় নিয়ে এল। কাগজ পড়ে নীরজা বললে— রোশনি, তোদের সরলা দিদিমণির কাণ্ডটা দেখলি ? হাটের লোকের সামনে ভদ্রঘরের Cat রোশনি। মনে পড়লে গায়ে কাটা দেয়, চোর-ডাকাতের বাড়া। ছিছিা! নীরজা। ওর সব-তাতেই গায়ে-পড়া বাহাদুরি। বেহায়াগিরির একশেষ। বাগান থেকে আরম্ভ করে জেলখানা পর্যন্ত। মরতে মরতেও দেমাক ঘোচে না। রোশনি। কিন্তু খোখী, দিদিমণির মনখানা দরাজ । নীরজা। ঠিক বলেছিস রোশনি, ঠিক বলেছিস। ভুলে গিয়েছিলুম। শরীর খারাপ থাকলেই মন খারাপ হয়। আগের থেকে যেন নিচু হয়ে গেছি। ছিছি, নিজেকে মারতে ইচ্ছে করে। সরলা খাটি ময়ে। মিথো কথা জানে না। অমন মেয়ে দেখা যায় না। আমার চেয়ে অনেক ভালো। শিগগির