পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষোড়শ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৩৭৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

। वारला अंबालए ‰ö&ኋ6? মুখের কথাতেও নূতন পুরাতন সংস্কৃত শব্দ ব্যবহার করি আবার পুঁথির ভাষাতেও এমন শব্দ চলিতেছে পূর্বে সাধু ভাষায় যাদের জল-চল ছিল না। সেইজন্যই পুঁথির ভাষায় ও মুখের ভাষায় সমান বহরের রেল পাতিবার যে-প্রভাব উঠিয়াছে, অভ্যাসের আরামে ও অহংকারে ঘা লাগিলেও আসল কথা, সংস্কৃত ভাষা যে-অংশে বাংলা ভাষার সহায় সে-অংশে তাহাকে লইতে হইবে, যে অংশে বোঝা সে-অংশে তাহাকে ত্যাগ করিতে হইবে। বাংলাকে সংস্কৃতের সস্তান বলিয়াই যদি মানিতে হয় তবে সেইসঙ্গে এ কথাও মানা চাই যে তার যোলো বছর পার হইয়াছে, এখন আর শাসন চলিবে না, এখন মিত্রতার দিন। কিন্তু যতদিন বাংলা বইয়ের ভাষা চলিত ভাষার ঠাট না গ্রহণ করিবে ততদিন বাংলা ও সংস্কৃত ভাষার সত্য সীমানা পাকা হইতে পরিবে না। ততদিন সংস্কৃত রৈয়াকরণের বর্গির দল আমাদের লেখকদের ত্ৰম্ভ করিয়া রাখিবেন। প্রাকৃত বাংলার ঠাটে যখন লিখিব তখন স্বভাবতই সুসংগতির নিয়মে সংস্কৃত ব্যাকরণের প্রভাব বাংলা ভাষার বেড়া পূর্বেই বলিয়াছি, বেড়ার ভিতরকার গাছ যেখানে একটু-আধটু ফাক পায় সেইখন দিয়াই আলোর দিকে ডালপালা মেলে, তেমনি করিয়াই বাংলার সাহিত্য-ভাষা সংস্কৃতের গরাদের ভিতর দিয়া, চলতি ভাষার দিকে মাঝে মাঝে মুখ বাড়াইতে শুরু করিয়াছিল। তা লইয়া তাহাকে কম লোকনিন্দা সহিতে হয় নাই। এইজন্যই বঙ্কিমচন্দ্রের অভু্যদয়ের দিনে তঁাকে কটুকথা অনেক সহিতে হইয়াছে। তাই মনে হয় আমাদের দেশে এই কটু কথার হাওয়াটাই বসন্ডের দক্ষিণ হাওয়া। ইহা কুঞ্জকনকে নাড়া দিয়া তাড়া দিয়া অস্থির করিয়া দেয়। কিন্তু এই শাসনটা ফুলের কীর্তন পুথির বাংলার যে অংশটা লইয়া বিশেষভাবে তর্ক প্রবল, তাহা ক্রিয়ার রূপ। "হইবের জায়গায় হবে’, ‘হইতেছোঁর জায়গায় হচে” ব্যবহার করিলে অনেকের মতে ভাষার শুচিত নষ্ট হয়। চীনারা যখন টিকি কাটে নাই তখন টিকির খর্বতাকে তারা মানের খর্বতা বলিয়া মনে করিত। আজ যেই তাহদের সকলের টিকি কাটা পড়িল অমনি তাহারা হাঁফ ছাড়িয়া বলিতেছে, আপদ গৈছে। এক সময়ে ছাপার বহিতে হয়েন’ লেখা চলিত, এখন “হন’ লিখিলে কেহ বিচলিত হন না। হইবা” “করিবার আকার গেল, “হইবেক” “করিবেক’-এর কা খসিল, “করাহ” চিলহার হ কোথায়? এখন নাহোঁর জায়গায় নয়’ লিখিলে বড়ো কেহ লক্ষ্যই করে না। এখন যেমন আমরা ‘কে হ’ লিখি, তেমনি এক সময়ে ছাপার বইয়েও তিনির বদলে “তেঁহ’ লিখিত। এক সময়ে "আমারদিগের’ শব্দটা শুদ্ধ বলিয়া গণ্য ছিল, এখন “আমাদের’ লিখিতে কারো হাত কঁপে না। আগে যেখানে লিখিতাম “সেহ’ এখন সেখানে লিখি “সোঁও’, অথচ পণ্ডিতের ভয়ে “কেহোঁকে ‘কেও’ অথবা ‘কেউ” লিখিতে পারি না। ভবিষ্যৎবাচক ‘করিহ’ শব্দটাকে ‘করিয়ো” লিখিতে সংকোচ করি না, কিন্তু তার বেশি আর একটু অগ্রসর হইতে সাহস হয় না। : এই তো আমরা পণ্ডিতের ভয়ে সতর্ক হইয়া চলি কিন্তু পণ্ডিত যখন পুঁথির বাংলা যাইল” কথা চালাইয়া দিলেন তখন তারা ক্ষণকালের জন্যও চিন্তা করেন নাই যে, এই ক্রিয়াপদটি একেবারে-বাংলাই নয়; যা ধাতু বাংলায় কেবলমাত্র বর্তমান কালেই চলে ; যথা, যাই, যাও, যায়। আর, যাইতে’ শব্দের যোগে বে-সকল ক্রিয়াপদ নিম্পন্ন হয় তাহাতেও চলে ; যেমন, “যচ্চি’