পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/১৬৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

NS 8 NR রবীন্দ্ৰ-রচনাবলী উত্তেজিত করিয়া দিলেন। এতদূর পড়িয়া আমরা দেবীকে ভক্তবৎসলা বলিতে পারি। কিন্তু -বহুকালাবধি আছি আমি সুরনিধি স্বর্ণ লঙ্কাধামে, বহুবিধা রত্ন-দানে বহু যত্ন করি, পূজে মোরে রক্ষেীরাজ। হায় এত দিনে বাম তার প্রতি বিধি। নিজ কর্ম-দোষে মজিছে সবংশে পাপী; তবুও তাহারে না পারি ছাড়িতে, দেব! বন্দী যে, দেবেন্দ্ৰ, কারাগার দ্বার নাহি খুলিলে কি কভু পারে সে বাহির হতে ? যতদিন বাঁচে রাবণ, থাকিব আমি বাঁধা তার ঘরে। আর-এক স্থলে- না হইলে নির্মূল সমূলে রক্ষঃপতি, ভবতল রসাতলে যাবে! অর্থাৎ তুমি কারাগারের দ্বার খুলিবার উপায় দেখো, রাবণকে বিনাশ করো, তাহা হইলেই আমি আস্তে আস্তে বাহির হইয়া আসিব। রাবণ পূজা করে বলিয়া মেঘনাদবধের লক্ষ্মীর তাহার প্রতি অত্যন্ত মেহ জন্মিয়াছে, এ নিমিত্ত সহজে তাহাকে ছাড়িয়া আসিতে পারেন না, ভাবিয়া ভাবিয়া একটি সহজ উপায় ঠাওরাইলেন, অর্থাৎ রাবণ সবংশে নিহত হইলেই তিনি মুক্তিলাভ করিবেন। আমাদের সহজ বুদ্ধিতে এইরূপ বোধ হয় যে, রাবণ যদি লক্ষ্মীর স্বভাবটা ভালো করিয়া বুঝিতেন ও ঘূণাক্ষরেও জানিতে পারিতেন যে লক্ষ্মী অবশেষে এইরূপ নিমকহারামি করিবেন, তবে নিতান্ত নির্বোধি না হইলে কখনোই তাহাকে । दश्कोव्लादिक्षेि বহুবিধা রত্নদানে বহু যত্ন করি পূজা করিতেন না। রাবণের, বিলক্ষণ জান তুমি তারে। ইহার মধ্যে যে একটু তীব্ৰ উপহাস আছে; দেবী হইয়া লক্ষ্মী ইন্দ্ৰকে যে এরূপ সম্বোধন করেন, ইহা আমাদের কানে ভালো শুনায় না। ওই ছত্র দুটি পড়িলেই আমরা লক্ষ্মীর যে মৃদুহাস্য বিষমাখা একটি মর্মভেদী কটাক্ষ দেখিতে পাই, তাহাতে দেবভাবের মাহাত্ম্য অনেকটা হ্রাস হইয়া যায়। লক্ষ্মী ওইরূপ আর-এক স্থলে ইন্দ্রের কৈলাসে যাইবার সময় তাহাকে কহিয়াছিলেন, বড়ো ভালো বিরাপাক্ষ বাসেন লক্ষ্মীরে। আছয়ে সে লঙ্কাপুরে! কত যে বিরলে ভাবয়ে সে অবিরল, একবার তিনি, কী দোষ দেখিয়া, তারে না ভাবেন মনে ? কোন পিতা দুহিতারে পতিগৃহ হতে রাখে দূরে- জিজ্ঞাসিয়ো, বিজ্ঞা জটাধরে। এখানে বিজ্ঞ জটাধর” কথাটি পিতার প্রতি কন্যার প্রয়োগ অসহনীয়। ইহার পর ষষ্ঠ সর্গে আর-এক স্থলে লক্ষ্মীকে আনা হইয়াছে। এখানে মায়া আসিয়া লক্ষ্মীকে তেজ সংবরণ করিতে বলিলেন। লক্ষ্মী কহিলেন,