পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৪০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

* २२ ब्रदौठ्-ब्रफ़नांवलौ সজি ফলমূলে দৈনিক জাহারব্যয় যৎসামান্ত ছিল। ঘটা করিয়া দুর্গোৎসব সম্পন্ন হইত, নিয়মিত পূজা-অৰ্চনা দানধ্যান ও আতিথ্যের ব্যয় ভিন্ন আর কোনো ব্যয়ই ছিল না। জনৃপের মৃত্যুর পর অতিথিশালাটি বাবুর্চিখানা হইয়া দাড়াইল। ব্রাহ্মণগুলার জালায় গোট চারেক রোয়ান রাখিতে হইল, তাহারা প্রত্যেক ভট্টাচার্যকে রীতিমত অর্ধচন্দ্রের ব্যবস্থা করিত এবং প্রত্যেক ভট্টাচাৰ্থ বিধিমতে নরেন্দ্রকে উচ্ছিন্ন যাইবার ব্যবস্থা করিয়া যাইত। নরেন্দ্র গ্রামে নিজ ব্যয়ে একটি ডিসপেনসরি স্থাপন করিলেন। শুনিয়াছি নহিলে সেখানে ব্রাপ্তি কিনিবার অন্য কোনো সুবিধা ছিল না। গবর্নমেন্টের সস্তা দোকান হইতে রায়বাহাদুরের খেলানা কিনিবার জন্য ঘোড়দৌড়ের চাঙ্গা পুস্তকে হাজার টাকা সই করিয়াছিলেন এবং এমন আরো অনেক সৎকাৰ্ধ করিয়াছিলেন যাহা লইয়া অমৃতবাজারের একজন পত্রপ্রেরক ভারি ধুমধাম করিয়া এক পত্র লেখে। তাহার প্রতিবাদ ও তাহার পুনঃপ্রতিবাদের সময় অমূলক অপবাদ দেওয়া যে ভালোকের অকর্তব্য ইহা লইয়া অনেক তর্ক বিতর্ক হয়। নরেন্দ্রকে পল্লীর লোকেরা জাতিচু্যত করিল, কিন্তু নরেন্স সে দিকে কটাক্ষপাত্তও করিলেন না । নরেন্দ্রের একজন সমাজসংস্কারক বন্ধু তাহার মিরাল করেজ’ লইয়া সভায় তুমুল আন্দোলন করিলেন। নরেন্দ্র বাগবাজারে এক বাড়ি ভাড়া করিয়াছেন ও কাশীপুরে এক বাগান ক্রয় করিয়াছেন। একদিন বাগবাজারের বাড়িতে সকালে বসিয়া নরেন্দ্র চা খাইতেছেন – নরেন্দ্রের সকাল ও আমাদের সকালে অনেক তফাত, সেদিন শনিবারে কুঠি ধাইবার সময় দেখিয়া আসিলাম, নরেন্দ্রের নাক ডাকিতেছে। দুইটার সময় ফিরিয়া আসিবার ‘কালে দেখি চোখ রগড়াইতেছেন, তখনো আস্তরিক ইচ্ছা জার-এক ঘুম দেন। বাহাই হউক নরেন্দ্র চা খাইতেছেন এমন সময়ে সমাজসংস্কারক গদাধরবাবু, কবিতাকুঙ্কমমরীপ্রণেতা কবিবর স্বরূপচন্দ্রবাবু, আসিয়া উপস্থিত হইলেন। প্রথম অভ্যর্থনা সমাপ্ত হইলে সকলে চেয়ারে উপবিষ্ট হইলেন। নানাবিধ কথোপকথনের পর গঙ্গাধরবাবু কহিলেন, “দেখুন মশায়, আমাদের দেশের স্ত্রীলোকদের দশ বড়ো শোচনীয়।” এই সময়ে নরেন্দ্ৰ শোচনীয় শব্দের অর্থ জিজ্ঞাসা করিলেন, স্বরূপচন্দ্রবাৰু কহিলেন— deplorable' । নরেন্সের পক্ষে উভয় কথাই সমান ছিল, কিন্তু নরেন্দ্র এই প্রতিশব্দটি শুনিয়া শোচনীয় শব্দের অর্থ টা যেন জল বুৰিয়া গেলেন। গঙ্গাধরবাৰু কহিলেন, “এখন জামাদিগের উচিত তাহাঙ্গের অন্তঃপুরের প্রাচীর ভাঙিয়া দেওয়া।” অমনি নরেন্দ্র গভীর ভাবে কহিলেন, কিন্তু এটা কতদূর হতে পারে তাই দেখা