পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৫২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

〉や8 ब्ररौठ-ब्रध्नांदलौ শিখাইয়াছিলেন পুরোহিত বাবাজি চাল-কলার সহিত তাহ নিঃশেষে হজম করিয়াছেন। বিবাহ হইয়া গেল। উঠিবার সময় সার্বভৌমমহাশয় কিরূপ বেগতিকে পায়ে পী জড়াইয় তাহার শ্বশুরের ঘাড়ে পড়িয়া গেলেন, উভয়ে বিবাহসভায় ভূমিসাং হইলেন । বরের কাপড় ছিড়িয়া গেল, টোপর ভাঙিয়া গেল। শ্বশুরের শূলবোন ছিল, স্থূলকায় ভট্টাচার্যমহাশয় তাহার উদর চাপিয়া পড়াতে তিনি বিষম চীৎকার করিয়া উঠিলেন। সাত-আট জন ধরাধরি করিয়া উভয়কে তুলিল, সভাশুদ্ধ লোক হাসিতে লাগিল, পণ্ডিতমহাশয় মর্মাস্তিক অপ্রস্তুত হইলেন ও দুই-একটি কী কথা বলিলেন তাহার অর্থ বুঝা গেল না। একবার দৈবাং অপ্রস্তুত হইলে পদে পদে অগ্রস্তুত হইতেই হইবে। অন্তঃপুরে গিয়া গোলেমালে পণ্ডিতমহাশয় তাহার শাশুড়ির পা মাড়াইয়া দিলেন, তাহার শাশুড়ি না— কিছু হয় নাই বলিলেন ও অন্দরে গিয়া সিক্ত বস্ত্রখণ্ড তাহার পায়ের আঙুলে বাধিয়া আসিলেন। আহার করিবার সময় দৈবক্রমে গলায় জল বাধিয়া গেল, আধঘণ্টা ধরিয়া কাশিতে কাশিতে নেত্র অশ্রুজলে ভরিয়া গেল । বাসর-ম্বরে বসিয়া আছেন, এমন সময়ে একটা আর তুলা আসিয়া তাহার গায়ে উড়িয়া বসিল । অমনি লাফাইয়া বাপাইয়া, হাত পা ছড়াইয়া, মুখ বিকটাকার করিয়া তাহার শালীদের ঘাড়ের উপর গিয়া পড়িলেন। আবার দুইটি-চারিটি কান-মলা খাইয়া ঠিক স্থানে আসিয়া বসিলেন। একটা কথা ভুলিয়া গিয়াছি, স্ত্রী আচার করিবার সময় পণ্ডিতমহাশয় এমন উপযুপরি হাচিতে লাগিলেন যে চারি দিকের মেয়েরা বিব্রত হইয়৷ পড়িল । বাসর-ঘরের বিপদ হইতে কী করিয়া উদ্ধার হইবেন এ বিষয়ে পণ্ডিতমহাশয় অনেক ভাবিয়াছিলেন ; সহসা নিধিকে মনে পড়িয়াছিল, কিন্তু নিধির বাসর-বরে যাইবার কোনো উপায় ছিল না। যাহা হউক, ভালোমানুষ বেচারি অতিশয় গোলে পড়িয়াছিলেন। শুনিয়াছি ছুটি-একটি কী কথার উত্তর দিতে গিয়া স্মৃতি ও বেদান্তস্থত্রের ব্যাখ্যা করিয়াছিলেন । এবং যখন তাহাকে গান করিতে অনুরোধ করে, অনেক পীড়াপীড়ির পর গাহিয়াছিলেন ‘কোথায় তারিণী মা গো বিপদে তারহু স্কুতে’। এই তিনি মনের সঙ্গে গাহিয়াছিলেন তাহাতে আর সন্দেহ নাই । ভট্টাচার্যমহাশয় রাগিণীর দিকে বড়ো একটা নজর করেন নাই, যে স্বরে তিনি পুতি পড়িতেন সেই স্বরেই গানটি গাহিয়াছিলেন। যাহা হউক, অনেক কষ্টে বিবাহরাত্রি অতিবাহিত হইল। পঞ্চম পরিচ্ছেদ মহেন্দ্র নরেন্দ্রদের দলে মিশিয়াছে বটে, কিন্তু এখনো মহেঞ্জের আচার-ব্যবহারে এমন একটি মহত্ব জড়িত ছিল যে, নরেন্দ্র তাহার সহিত ভালো করিয়া কথা কহিতে সাহল