পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৬৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S89 রবীন্দ্র-রচনাবলী বেচারি করুণা না খাওয়া, না দাওয়া, কাদিয়া-কাটিয়া একাকার করিয়া দিল । কী করিতে হয় কিছুই জানে না, অধীর হইয়৷ বেড়াইতে লাগিল। পণ্ডিতমহাশয় এ কুসংবাদ শুনিয়া অত্যন্ত ব্যস্ত হইয়া পড়িলেন। কিন্তু কী করিতে হুইবে সে বিষয়ে তার করুণা অপেক্ষা অধিক জানিবার কথা নহে। অনেক ভাবিয়া-চিন্তিয়া নিধিকে ডাকিয়া পাঠাইলেন ; নিধি জিনিসপত্র বিক্রয় করিয়া ধার শুধিতে পরামর্শ দিল। এখন বিক্রয় করে কে। সে স্বয়ং তাহার ভার লইল । করুণার অলংকার অল্পই ছিল— পূর্বেই নরেন্দ্র তাহার অধিকাংশ বন্ধক দিয়াছে ও বিক্রয় করিয়াছে, বাহা-কিছু অবশিষ্ট ছিল সমস্ত আনিয়া দিল। নিধি সেই সমুদয় অলংকার ও অন্যান্য গার্হস্থ্য দ্রব্য অধিকাংশ নিজে ধংসামান্ত মূল্যে, কোনো কোনোটা বা বিনা মূল্যেই গ্রহণ করিল ও অবশিষ্ট বিক্রয় করিল। পণ্ডিতমহাশয় তো কাদিতে বসিলেন, ভয়ে কষ্টে করুণ অধীর হইয়। উঠিল। বিক্রয় করিয়া স্বাহ-কিছু পাওয়া গেল তাহাতে পণ্ডিতমহাশয় নিজের সঞ্চিত অর্থের অধিকাংশ দিয়া দেয়-অর্থ কোনো প্রকারে পূরণ করিয়া দিলেন। নরেন্দ্র কারাগার श्रङ भूख् श्ल, किरू भ१ श्ङ भूङ श्झेल न। उडिंद्र ७झे घऎनांब्र ऊांशग्न কিছুমাত্র শিক্ষাও হইল না। যেরকম করিয়াই হউক-না কেন, এখন মদ নহিলে তাহার আর চলে না। করুণার প্রতি কিছুমাত্র সদয় হয় নাই, করুণ গার্হস্থ্য দ্রব্যাদি কেন আমন করিয়া বিক্রয় করিল তাহাই লইয়া নরেন্দ্র করুণাকে যথেষ্ট পীড়ন করিয়াছে। গদাধর ও স্বরূপ এখানে আসিয়াও জুটিয়াছে। সেবারকার প্রহারের পরও গদাধরের অন্ত:পুরসংস্কার প্রিয়তা কিছুমাত্র কমে নাই, বরং বৃদ্ধি পাইয়াছে। যেখানেই যাউক-না কেন সেখানেই তাহার ঐ চিন্তা, নরেন্দ্রের দেশেও তাহার সেই উদ্বেপ্তেই আগমন। ইচ্ছা আছে এখানেও দুই-একটি সং উদাহরণ রাখিয়া বাইবেন। পূর্বপরিচিত বন্ধুদের পাইয়া নরেন্দ্র বিলক্ষণ আমোদ করিতে লাগিলেন। স্বরূপ ও গদাধরের নিকট আরো অনেক ঋণ করিলেন। তাহারা জানিত না যে নরেন্দ্র লক্ষ্মীভ্ৰষ্ট হইয়াছে, স্বতরাং বিশ্বস্তচিত্তে কিঞ্চিং স্বদের আশা করিয়া ধার দিল । গদাধরের হন্তে এইবার একটি কাজ পড়িয়াছে। নরেন্ত্রের মুখে সে কাত্যায়নী ঠাকুরানীর সমুদয় বৃত্তান্ত শুনিতে পাইয়াছে, শুনিয়া সে মহা জলিয়া উঠিয়াছে। বিবাহিত স্ত্রী-পুরুষের মধ্যে এত বয়সের তারতম্য কোনো হৃদয়সম্পন্ন মন্থন্ত সহ করিতে পারে না— বিশেষত সমাজসংস্কারই বাহাজের জীবনের প্রধান উদ্দেশু, হৃদয়ের প্রধান আশা, অবকাশের প্রধান ভাবনা, কার্যক্ষেত্রের প্রধান কার্ধ, তাহারা সমাজের এ-সকল অন্যায় অবিচার কোনোমতেই সহ করিতে পারে না। ইহা সংশোধনের জন্য, এ প্রকার জন্তাররূপে বিবাহিত স্ত্রীলোকদিগের কষ্ট নিবারণের জন্য সংস্কারকদিগের সকল