পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২২৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রবীন্দ্র-রচনাবলী وا ه چ গভীরতররূপে সম্পূর্ণ করিয়া লইতেছি। কোন গীতিকাব্যরচয়িতার কোন কবিতা ভালো, কোনটা মাঝারি, তাহাই খণ্ড খণ্ড করিয়া দেখানে সমালোচকের কাজ নহে। তাহার সমস্ত কাব্যের ভিতর দিয়া বিশ্ব কোন বাণীরূপে আপনাকে প্রকাশ করিতেছে তাহাই বুঝিবার যোগ্য। কবিকে উপলক্ষ করিয়া বীণাপাণি বাণী, বিশ্বজগতের প্রকাশশক্তি, আপনাকে কোন আকারে ব্যক্ত করিয়াছেন তাহাই দেখিবার বিষয়। জগতের মধ্যে যাহা অনির্বচনীয় তাহা কবির হৃদয়ত্বারে প্রত্যহ বারংবার আঘাত করিয়াছে, সেই অনির্বচনীয় যদি কবির কাব্যে বচন লাভ করিয়া থাকে— জগতের মধ্যে যাহা অপরূপ তাহা কবির মুখের দিকে প্রত্যহ আসিয়া তাকাইয়াছে, সেই অপরূপ যদি কবির কাব্যে রূপলাভ করিয়া থাকে— যাহা চোখের সম্মুখে মূর্তিরূপে প্রকাশ পাইতেছে তাহা যদি কবির কাব্যে ভাবরূপে আপনাকে ব্যাপ্ত করিয়া থাকে— স্বাহ অশরীরভাবরূপে নিরাশ্রয় হইয়া ফিরে তাহাই যদি কবির কাব্যে মূর্তি পরিগ্রহ করিয়া সম্পূর্ণতালাভ করিয়া থাকে- তবেই কাব্য সফল হইয়াছে এবং সেই সফল কাব্যই কবির প্রকৃত জীবনী। সেই জীবনীর বিষয়ীভূত ব্যক্তিটিকে কাব্যরচয়িতার জীবনের সাধারণ ঘটনাবলীর মধ্যে ধরিবার চেষ্টা করা বিড়ম্বন । বাহির হইতে দেখো না এমন করে, আমায় দেখো না বাহিরে । আমায় পাবে না আমার দুখে ও মুখে, আমার বেদন খুজো না আমার বুকে, আমায় দেখিতে পাবে না আমার মুখে, কবিরে খুজিছ যেথায় সেথা সে নাহি রে।. ষে আমি স্বপনমুরতি গোপনচারি, যে আমি আমারে বুঝিতে বোঝাতে নারি, আপন গানের কাছেতে আপনি হারি, সেই আমি কবি, এসেছ কাহারে ধরিতে ? মানুষ-আকারে বদ্ধ যে জন ধরে, ভূমিতে লুটায় প্রতি নিমেষের ভরে, যাহারে কাপায় স্ততিনিন্দার জরে, কবিরে খুজিছ তাহারি জীবনচরিতে ? 9)