পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৭৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

← ©8 রবীন্দ্র-রচনাবলী নয়। কাব্যের রূপ যদি টুথ-রূপে অত্যন্ত প্রতীতিযোগ্য না হয় তা হলে তথ্যের আদালতে সে অনিন্দনীয় প্রমাণিত হলেও কাব্যের দরবারে সে নিন্দিত হবে। মন ভোলাবার আসরে তার অলংকারপুঞ্জ বমি-বা অত্যন্ত গুঞ্জরিত হয়, অর্থাৎ সে যদি মুখর ভাষায় স্বন্দরের গোলামি করে, তবু তাতে তার অবাস্তবতা আরো বেশি করেই ঘোষণা করে। আর এতেই যারা বাহবা দিয়ে ওঠে, রূঢ় শোনালেও বলতে হবে, তাদের মনের ছেলেমামুষি ঘোচে নি । শেষকালে একটা কথা বলা দরকার বোধ করছি। ভাবগতিকে বোধ হয়, আজকাল অনেকের কাছেই বাস্তবের সংজ্ঞা হচ্ছে ‘ষা-ভা’ । কিন্তু আসল কথা, বাস্তবই হচ্ছে মানুষের জ্ঞাত বা অজ্ঞাত -সারে নিজের বাছাই-করা জিনিস। নিবিশেষে বিজ্ঞানে সমান মূল্য পায় যা-তা। সেই বিশ্বব্যাপী ষা-ভা থেকে বাছাই হয়ে বা আমাদের আপন স্বাক্ষর নিয়ে আমাদের চার-পাশে এসে ঘিরে দাড়ায় তারাই আমাদের বাস্তব। আর যে-সব অসংখ্য জিনিস নানা মূল্য নিয়ে নানা হাটে ৰায় ছড়াছড়ি, বাস্তবের মূল্য-বজিত হয়ে তারা আমাদের কাছে ছায়া। পাড়ায় মদের দোকান আছে, সেটাকে ছন্দ্রে বা আছন্দে কাব্যরচনায় ভূক্ত করলেই কোনো কোনো মহলে সন্তা হাততালি পাওয়ার অাশা আছে। সেই মহলের বাসিন্দারা বলেন, বহুকাল ইন্দ্রলোকে স্বরাপান নিয়েই কবির মাতামাতি করেছেন, ছন্দেবন্ধে শুড়ির দোকানের আমেজমাত্র দেন নি– অথচ শুড়ির দোকানে হয়তো র্তাদের আনাগোনা যথেষ্ট ছিল । এ নিয়ে অপক্ষপাতে আমি বিচার করতে পারি – কেননা, আমার পক্ষে শুড়ির দোকানে মদের আড়া যত দূরে ইগুলোকের স্বৰাপানসভা তার চেয়ে কাছে নয়, অর্থাং প্রত্যক্ষ পরিচয়ের হিসাবে । আমার বলবার কথা এই যে, লেখনীর জাদুতে, কল্পনার পরশমণিম্পর্শে, মদের জাড়াও বাস্তব হয়ে উঠতে পারে, সুধাপানসভাও । কিন্তু সেটা হওয়া চাই। অথচ দিনক্ষণ এমন হয়েছে যে, ভাঙা ছন্দে মদের দোকানে মাতালের আড্ডার অবতারণা করলেই আধুনিকের মার্ক মিলিয়ে যাচনার বলবে স্থা, কবি বটে, বলৰে এৰেই তো বলে রিস্থালিজম – আমি বলছি, বলে না। রিয়ালিজমের দোহাই দিয়ে এরকম সস্ত কৰিও অত্যন্ত বেশি চলিত হয়েছে। আর্ট এত সস্ত নয়। ধোবার বাড়ির ময়লা কাপড়ের ফর্ম নিয়ে কবিতা লেখা নিশ্চয়ই সম্ভব, বাস্তবের ভাষায় এর মধ্যে বস্তা-ভরা আদিরস করুণরস এবং বীভংগরসের অবতারণা করা চলে। ৰে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে হুইবেল বৰাৰষ্টি চুলেচুলি, তাদের কাপড়ছুটে এক ঘাটে একসঙ্গে আছাড় খেয়ে খেয়ে নির্মল হয়ে উঠছে, স্বশেষে ওয়ার হয়ে চলছে একই নাৰায় পিট, এ বিটা বা স্থলীতে যি