পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৬১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আশ্রমের রূপ ও বিকাশ ○○。 বি. এ. পরীক্ষা তার আসন্ন হয়ে এল। অধ্যাপকেরা তার কাছে আশা করেছিল খুব বড়ো রকমেরই কৃতিত্ব। ঠিক সেই সময়েই সে পরীক্ষা দিল না। তার ভয় হল সে পাস করবে। পাস করলেই তার উপরে সংসারের যে-সমস্ত দাবি চেপে বসবে তার পীড়ন ও প্রলোভন থেকে মুক্তি পাওয়া পাছে তার পক্ষে অসাধ্য হয় এইজন্তেই সে পিছিয়ে গেল শেষ মুহুর্তে। সংসারের দিক থেকে জীবনে সে একটা মস্ত ট্র্যাজিডির পত্তন করলে। আমি তার আর্থিক অভাব কিছু পরিমাণে পূরণ করবার স্বতই চেষ্ট করেছি কিছুতেই তাকে রাজি করতে পারি নি। মাঝে মাঝে গোপনে তাদের বাড়িতে পাঠিয়েছি টাকা। কিন্তু সে সামান্ত। তখন আমার বিক্রি করবার যোগ্য বা-কিছু ছিল প্রায় সব শেষ হয়ে গেছে— অস্তঃপুরের সম্বল এবং বাইরের সম্বল। কয়েকটা আয়জনক বইয়ের বিক্রয়স্বত্ব কয়েক বৎসরের মেয়াদে দিয়েছি পরের হাতে । হিসাবের ভূর্বোধ জটিলতায় সে মেয়াদ অতিক্রম করতে অতি দীর্ঘকাল লেগেছে। সমুদ্রতীরবাসের লোভে পুরীতে একটা বাড়ি করেছিলুম। সে বাড়ি একদিনও ভোগ করবার পূর্বে আশ্রমের ক্ষুধার দাবিতে বিক্রি হয়ে গেল। তার পরে যে সম্বল বাকি রইল তাকে বলে উচ্চহারের স্বদে দেনা করবার ক্রেডিট। সতীশ জেনেশুনেই এখানকার সেই অগাধ দারিত্র্যের মধ্যে ঝাপ দিয়েছিল প্রসন্ন মনে । কিন্তু তার আনন্দের অবধি ছিল না— এখানকার প্রকৃতির সংসর্গের আনন্দ, সাহিত্যসম্ভোগের আনন্দ, প্রতি মুহূর্তে আত্মনিবেদনের আনন্দ । এই অপর্যাপ্ত আনন্দ্ব সে সঞ্চার করত তার ছাত্রদের মনে। মনে পড়ে কতদিন তাকে পাশে নিয়ে শালবীথিকায় পায়চারি করেছি নানা তত্ত্বের আলোচনা করতে করতে— রাত্রি এগারোটা দুপুর হয়ে যেত— সমস্ত আশ্রম হত নিস্তৰ নিগ্রামগ্ন। তারই কথা মনে করে আমি লিখেছি— কতদিন এই পাতা-করা বৗখিকায়, পুষ্পগন্ধে বসন্তের আগমনী-ভর সায়াহ্নে দুজনে মোরা ছায়াতে অঙ্কিত চন্দ্রালোকে ফিরেছি গুৰিত আলাপনে। তার সেই মুখ চোখে विद एमथ निtघ्नहिज बन्ममयमांद्र ब्राड ब्रांड । যৌবনতুফান-লাগা সেদিনের কত নিদ্রাভাঙা জ্যোৎস্না-মুগ্ধ রজনীর সৌহার্দ্যের স্বধারসধারা তোমার ছায়ার মাঝে দেখা ছিল, হয়ে গেল সারা ।