পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪২০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\రిసెb* রবীন্দ্র-রচনাবলী কিন্তু বাংলার বাইরে বা বিদেশে ৰে সমাদর, যে প্রতি লাভ করি তার উপরে আমার আত্মাভিমানের দাবি নেই। এইজন্য এই দানকেই ভগবানের দান বলে আমি গ্রহণ করি। তিনি আমাকে দয়া করেন, নতুবা অপরের আমাকে দয়া করেন এমন কোনো হেতু নেই। ভগবানের এই দানে মন নম্র হয়, এতে অহংকার জন্মে না। আমরা নিজের পকেটের চার-আনার পয়সা নিয়েও গর্ব করতে পারি, কিন্তু ভগবান আকাশ ভরে যে সোনার আলো ঢেলে দিয়েছেন, কোনো কালেই যার মূল্য শোধ করতে পারব না, সেই আলোর অধিকার নিয়ে কেবল আনন্দই করতে পারি, কিন্তু গর্ব করতে পারি নে। পরের দত্ত সমাদরও সেইরকম অমূল্য— সেই দান আমি নম্রশিরেই গ্রহণ করি, উদ্ধতশিরে নয়। এই সমাদরে আমি বাংলাদেশের সস্তান বলে উপলব্ধি করবার স্বযোগ লাভ করি নি। বাংলাদেশের ছোটো ঘরে আমার গর্ব করবার স্থান ছিল, কিন্তু ভারতের বড়ো ঘরে আমার আনন্দ করবার স্থান । আমার প্রভু আমাকে তার দেউড়িতে কেবলমাত্র বঁাশি বাজাবার ভার দেন নি— শুধু কবিতার মালা গাথিয়ে তিনি আমাকে ছুটি দিলেন না। আমার ীেবন যখন পার হয়ে গেল, আমার চুল যখন পাকল, তখন তার অঙ্গনে আমার তলব পড়ল। সেখানে তিনি শিশুদের মা হয়ে বসে আছেন । তিনি আমাকে হেসে বললেন, ‘ওরে পুত্র, এতদিন তুই তো কোনো কাজেই লাগলি নে, কেবল কথাই গেঁথে বেড়ালি। বয়স গেল, এখন যে কয়টা দিন বাকি আছে, এই শিশুদের সেবা কর।’ কাজ শুরু করে দিলুম— সেই আমার শাস্তিনিকেতনের বিদ্যালয়ের কাজ। কয়েকজন বাঙালির ছেলেকে নিয়ে মাস্টারি শুরু করে দিলুম। মনে অহংকার হল, এ আমার কাজ, এ আমার স্বষ্টি । মনে হল, আমি বাংলাদেশের হিতসাধন করছি, এ অামারই শক্তি । , Fra কিন্তু এ যে প্রভুরই আদেশ– যে প্ৰভু কেবল বাংলাদেশের নন— সেই কথা ধায় কাজ তিনিই স্মরণ করিয়ে দিলেন। সমুত্রপার হতে এলেন বন্ধু এগুজ, এলেন বন্ধু পিয়ার্সন। আপন লোকের বন্ধুত্বের উপর দাবি আছে, সে বন্ধুত্ব আপন লোকেরই সেবায় লাগে। কিন্তু র্যাদের সঙ্গে নাড়ীর সম্বন্ধ নেই, যাদের ভাষা স্বতন্ত্র, ব্যবহার স্বতন্ত্র, তারা যখন অনাহুত আমার পাশে এসে দাড়ালেন তখনই আমার অহংকার ঘুচে গেল, আমার আনন্দ জন্মাল। যখন ভগবান পরকে জাপন করে দেন, তখন সেই আত্মীয়তার মধ্যে র্তাকেই আত্মীয় বলে জানতে পারি। আমার মনে গর্ব জন্মেছিল যে, আমি স্বদেশের জন্য অনেক করছি— আমার অর্থ,