পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪২৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8 * * রবীন্দ্র-রচনাবলী যেন না করি, আমি যখন যাব তখন কে একে দেখবে, এর ভবিষ্কতে কী আছে কী নেই। এইটুকু সাম্বন বহন করে যেতে চাই, যতটুকু পেরেছি তা করেছি, মনে যা পেয়েছি দুর্ভর হলেও কর্মে তাকে গ্রহণ করা হল । তার পরে সংসারের লীলায় এই প্রতিষ্ঠান নানা অবস্থার মধ্য দিয়ে কী ভাবে বিকাশ পাবে তা কল্পনাও করতে পারি নে। লোভ হতে পারে, আমি যে ভাবে এর প্রবর্তন করেছি অবিকল সেই ভাবে এর পরিণতি হতে থাকবে । কিন্তু সেই অংহকৃত লোভ ত্যাগ করাই চাই । সমাজের সঙ্গে কালের সঙ্গে যোগে কোন রূপর পাস্তরের মধ্য দিয়ে আপন প্রাণবেগে ভাৰী কালের পথে এই প্রতিষ্ঠানের যাত্রা, আজ কে তা নিদিষ্ট করে দিতে পারে। এর মধ্যে আমার ব্যক্তিগত ষা আছে ইতিহাস তাকে চিরদিন স্বীকার করবে, এমন কখনো হতেই পারে না। এর মধ্যে যা সত্য আছে তারই জয়যাত্রা অপ্রতিহত হোক । সত্যের সেই সঞ্জীবন-মন্ত্র এর মধ্যে যদি থাকে তবে বাইরের অভিব্যক্তির দিকে যে রূপ এ গ্রহণ করবে আজকের দিনের ছবির সঙ্গে তার মিল হবে না বলেই ধরে নিতে পারি। কিন্তু ‘মা গৃধ:'— নিজের হাতে গড় আকারের প্রতি লোভ কোরো না । স্বা-কিছু ক্ষুদ্র, যা আমার অহমিকার স্বষ্টি, আজ আছে কাল নেই, তাকে যেন আমরা পরমাশ্রয় বলে সাম্প্রদায়িক ভিত্তিতে পাকা করে গড়বার আয়োজন না করি । প্রতি মুহূর্তের সত্য চেষ্টা সত্য কর্মের মধ্য দিয়েই আমাদের প্রতিষ্ঠান আপন সজীব পরিচয় দেবে, সেইখানেই তার চিরস্তন জীবন । জনস্থলভ স্কুল সমৃদ্ধির পরিচয় দিতে প্রয়াস করে ব্যবসায়ীর মন সে না কিমুক ; আন্তরিক গরিমায় তার যথার্থ শ্ৰী প্রকাশ পাবে। আদর্শের গভীরতা যেন নিরস্ত সার্থকতায় তাকে আত্মসষ্টির পথে চালিত করে। এই সার্থকতার পরিমাপ কালের উপর নির্ভর করে না, কেননা সত্যের অনন্ত পরিচয় আপন বিশুদ্ধ প্রকাশক্ষণে । জ্যৈষ্ঠ ১৩৩৭ S& আমার মধ্য-বয়সে অামি এই শাস্তিনিকেতনে বালকদের নিয়ে এক বিদ্যালয় স্থাপন করতে ইচ্ছা করি। মনে তখন আশঙ্কা ও উদবেগ ছিল, কারণ কর্মে অভিজ্ঞতা ছিল না। জীবনের অভ্যাস ও তদুপযোগী শিক্ষার অভাব, অধ্যাপনাকর্মে নিপুণতার অভাব সত্বেও জামায় সংকল্প দৃঢ় হয়ে উঠল, কারণ চিন্তা করে দেখলেম ষে, আমাদের দেশে