পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৫৩০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(? ob- ब्रदौठण-ब्रक्रमांवलौ জীবনে জন্মগ্রহণ করেছেন, সেইদিনই বড়োদিন— যে তারিখেই আস্বক। আমাদের জীবনে তার জন্মদিন দৈবাৎ আসে, কিন্তু কুশে বিদ্ধ তার মৃত্যু সে তো আসে দিনের পর দিন। জানি আজ বিশেষ দিনে দেশে দেশে গির্জায় গির্জায় তার স্তবধ্বনি উঠছে, যিনি পরমপিতার বার্তা এনেছেন মানবসন্তানের কাছে— আর সেই গির্জার বাইরে রক্তাক্ত হয়ে উঠছে পৃথিবী ভ্রাতৃহত্যায়। দেবালয়ে স্তবমন্ত্রে তাকে আজ যারা ঘোষণা করছে তারাই কামানের গর্জনে তাকে অস্বীকার করছে, আকাশ থেকে মৃত্যুবর্ষণ করে তার বাণীকে অতি ভীষণ ব্যঙ্গ করছে। লোভ আজ নিদারুণ, দুর্বলের অন্নগ্রাস আজ লুষ্ঠিত, প্রবলের সামনে দাড়িয়ে খৃষ্ট্রের দোহাই দিয়ে মার বুকে পেতে নিতে সাহস নেই যাদের তারাই আজ পূজাবেদীর সামনে দাড়িয়ে মৃত্যুশূলবিদ্ধ সেই কারুণিকের জয়ধ্বনি করছে অভ্যস্ত বচন আবৃত্তি করে। তবে কিসের উৎসব আজ। কেমন করে জানব খৃষ্ট জন্মেছেন পৃথিবীতে। আনন্দ করব কী নিয়ে। এক দিকে র্যাকে মারছি নিজের হাতে, আর-এক দিকে পুনরুজ্জীবন প্রচার করব শুধুমাত্র কথায়। আজও তিনি মানুষের ইতিহাসে প্রতিমুহূর্তে কুশে বিদ্ধ হচ্ছেন। so তিনি ডেকেছিলেন মানুষকে পরমপিতার সন্তান বলে, ভাইকে মিলতে বলেছিলেন ভাইয়ের সঙ্গে। প্রাণোৎসর্গ করলেন এই মানবসত্যের বেদীতে। চিরদিনের জন্যে এই মিলনের আহবান রেখে গেলেন আমাদের কাছে । র্তার আহবানকে আমরা যুগে যুগে প্রত্যাখ্যান করেছি। বেড়েই চলল তার বাণীর প্রতিবাদ করবার অতি বিপুল আয়োজন । বেদমন্ত্রে আছে তিনি আমাদের পিতা : পিতা নোহলি । সেইসঙ্গে প্রার্থনা আছে : পিতা নো বোধি। তিনি যে পিতা এই বোধ যেন আমাদের মনে জাগে । সেই পিতার বোধ যিনি দান করতে এসেছিলেন তিনি ব্যর্থ হয়ে, উপহসিত হয়ে, ফিরছেন আমাদের দ্বারের বাইরে— সেই কথাকে গান গেয়ে স্তব করে চাপা যেন না দিই। আজ পরিতাপ করবার দিন, আনন্দ করবার নয়। আজ মানুষের লজ্জা সমস্ত পৃথিবী ব্যাপ্ত করে। আজ আমাদের উদ্ধত মাথা ধুলায় নত হোক, চোখ দিয়ে অশ্রু বয়ে যাক। বড়োদিন নিজেকে পরীক্ষা করবার দিন, নিজেকে নম্র করবার দিন । ২৫ ডিসেম্বর ১৯৩২ קסטל החג শাস্তিনিকেতন