পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৬২০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ब्रवैौटश-ब्रानांवलौ مناهجه স্বর্ষোদ্বয়ের সময় । সূর্যান্তের সময় সে ছায়া অপহরণ করে নিয়েছে। বহির্জগতের এই স্বল্প পরিচয় আমার মধ্যে একটা সৌন্দর্ষের আবেশ সৃষ্টি করত। জানলার ফাক দিয়ে যা আমার চোখে পড়ত তাতেই যেটুকু পেতুম তার চেয়ে যা পাই নি তাই বড়ো হয়ে উঠেছে কাঙাল মনের মধ্যে। সেই না-পাওয়ার একটি বেদনা ছিল বাংলার পল্লীগ্রামের দিগন্তের দিকে চেয়ে । সেই সময় অকস্মাৎ পেনেটির বাগানে আসতে পেয়েছিলুম ডেঙ্গুজয়ের প্রভাবে বাড়ির লোক অন্ধস্থ হওয়ায় । সেই গঙ্গার ধারের স্নিগ্ধ শুামল আতিথ্য জামায় নিবিড়ভাবে স্পর্শ করল । গঙ্গার স্রোতে ভেসে যেত মেঘের ছায়া ; ভাটার স্রোতে জোয়ারের স্রোতে চলত নৌকো পণ্য নিয়ে, যাত্রী নিয়ে। বাগানের খিড়কির পুকুরপাড়ে কত গাছ, যে-সব গাছে ছিল বাংলাদেশের পাড়াগায়ের বিশেষ পরিচয় । পুকুরে আসভ-যেত ধারা সেই-সব পল্লীবাসী-পল্লীবাসিনীদের সঙ্গে একরকমের চেনাশোনা হল – নিকট থেকে নাই হোক, অসংসন্ত অন্তরাল থেকে । তার পর পল্লীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ পরিচয়ের স্থযোগ হয়েছিল পূর্ববঙ্গে— ঠিক পূর্ববঙ্গে ময়, নদীয়া এবং রাজসাহী জেলার সন্নিকটে । সেখানে পল্লীগ্রামের নদীপথ বেয়ে নানান জায়গায় ভ্রমণ করতে হয়েছে আমাকে। পল্লীগ্রামকে অন্তরঙ্গভাবে জানবার, তার আনন্দ ও দুঃখকে সন্নিকটভাবে অনুভব করবার স্বযোগ পেলেম এই প্রথম । লোকে অনেক সময়ই আমার সম্বন্ধে সমালোচনা করে ঘরগড়া মত নিয়ে। বলে, উনি তো ধনী-ঘরের ছেলে। ইংরেজিতে ষাকে বলে, রুপের চামচে মুখে নিয়ে জন্মেছেন । পল্লীগ্রামের কথা উনি কী জানেন । আমি বলতে পারি, আমার থেকে কম জানেন তারা যারা এমন কথা বলেন । কী দিয়ে জানেন তারা । অভ্যাগের জড়তার ভিতর দিয়ে জানা কি যায়? যথার্থ জানায় ভালোবাসা । কুঁড়ির মধ্যে যে কীট জন্মেছে সে জানে না ফুলকে । জানে, বাইরে থেকে যে পেয়েছে আনন্দ । আমার যে নিরস্তুর ভালোবাসার দৃষ্টি দিয়ে আমি পল্লীগ্রামকে দেখেছি তাতেই তার হৃদয়ের দ্বার খুলে গিয়েছে। আজ বললে অহংকারের মতো শোনাবে, তৰু বলব আমাদের দেশের খুব অল্প লেখকই এই রসবোধের চোখে বাংলাদেশকে দেখেছেন। আমার রচনাতে পল্লীপরিচয়ের যে অন্তরঙ্গতা আছে, কোনো বাধাবুলি দিয়ে তার সত্যতাকে উপেক্ষা করলে চলবে না । সেই পল্লীর প্রতি ষে একটা আনন্দময় আকর্ষণ আমার যৌবনের মুখে জাগ্রত হয়ে উঠেছিল আজও তা যায় নি। কলকাতা থেকে নির্বাসন নিয়েছি শাস্তিনিকেতনে। চারি দিকে তার পীর আবেষ্টনী। কিন্তু সে তার একটা বিশেষ দৃপ্ত। পুকুর-নদী বিল-খালের ষে বাংলাদেশ