পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৬২৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

受 রবীন্দ্র-রচনাবলী جه وا তার যে একটি বাহুল্যবর্জিত রূপ প্রকাশ পেত তা আমার কাছে বড়ো লেখার চেয়ে অনেক সময় আরো বেশি আদর পেয়েছে। আমার নিজের বিশ্বাস বড়ো বড়ো কবিতা পড়া আমাদের অভ্যাস বলেই কবিতার আয়তন কম হলে তাকে কবিতা বলে উপলব্ধি করতে আমাদের বাধে। অতিভোজনে যারা অভ্যস্ত, জঠরের সমস্ত জায়গাটা বোঝাই না হলে আহারের আনন্দ তাদের অসম্পূর্ণ থাকে ; জাহার্ধের শ্রেষ্ঠত তাদের কাছে খাটো হয়ে যায় আহারের পরিমাণ পরিমিত হওয়াতেই। আমাদের দেশে পাঠকদের মধ্যে আয়তনের উপাসক অনেক আছে– সাহিত্য সম্বন্ধেও তারা বলে, নাল্পে স্থখমস্তি— নাট্য-সম্বন্ধেও তারা রাত্রি তিনটে পর্যন্ত অভিনয় দেখার দ্বারা টিকিট কেনার সার্থকতা বিচার করে। জাপানে ছোটো কাব্যের অমর্যাদা একেবারেই নেই। ছোটোর মধ্যে বড়োকে দেখতে পাওয়ার সাধনা তাদের– কেননা তারা জাত-আর্টিস্ট । সৌন্দৰ্য-বস্তুকে তারা গজের মাপে বা সেরের ওজনে হিসাব করবার কথা মনেই করতে পারে না । সেইজন্তে জাপানে যখন আমার কাছে কেউ কবিতা দাবি করেছে, দুটি-চারটি লাইন দিতে আমি इडेउं हहे নি। তার কিছুকাল পূর্বেই আমি যখন বাংলাদেশে গীতাঞ্জলি প্রভৃতি গান লিখছিলুম, তখন আমার অনেক পাঠকই লাইন গণনা করে আমার শক্তির কাপণ্যে হতাশ হয়েছিলেন —এখনো সে-দলের লোকের অভাব নেই। এইরকম ছোটো ছোটো লেখায় একবার আমার কলম যখন রস পেতে লাগল তখন আমি অনুরোধনিরপেক্ষ হয়েও খাতা টেনে নিয়ে আপন-মনে যা-ত লিখেছি... । —রবীন্দ্র-রচনাবলী ১৪, পৃ ২৭-২৮ ; লেখন ( ১৩৬৮) লেখন-এর ভূমিকায় রবীন্দ্রনাথ লিখিয়াছেন, “এই লেখনগুলি স্বরু হয়েছিল চীনে জাপানে।” কিন্তু চীনে জাপানে যাইবার পূর্বেও কবিকে 'স্বাক্ষরলিপির দাৰি মিটাইতে হইয়াছে। ফুলিঙ্গের কবিতাগুলির অধিকাংশের রচনাকাল নির্ণয় করা দুরূহ। বিভিন্ন স্বাক্ষরসংগ্রহে যে তারিখ পাওয়া যায় তাহাই যে উহার রচনাকাল, তাহ নিশ্চয় করিয়া বলা যায় না । বহু কবিতা লেখন কাব্য-প্রকাশের পরবর্তীকালে রচিত, কতকগুলি লেখনের সমসাময়িক, বহু পুরাতন পাণ্ডুলিপি হইতেও কয়েকটি কবিতা সংগৃহীত হইয়াছে। ২১, ৮•, ৯৯, ১৭৯, ২৩৮ ও ২৫৭ সংখ্যক কবিতা গীতিমালোর পাণ্ডুলিপি হইতে সংগৃহীত : বিলাতের নার্সিংহোমে বা সমুদ্রবক্ষে, ১৯১৩ সালে রচিত অনেকগুলি লেখন এই খাতায় আছে ; তাহার অধিকাংশ লেখন গ্রন্থে স্থান পাইয়াছে, অৰশিষ্টগুলি স্ফুলিঙ্গে সংকলিত ।