পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৬৫৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\99N রবীন্দ্র-রচনাবলী সমবায়ে ম্যালেরিয়া-নিবারণ : “বিশ্বভারতী সম্মিলনী ও অ্যাটি-ম্যালেরিয়াল সোসাইটির উদ্যোগে ২৯শে আগস্ট [ ১৯২৩ ] তারিখে কলিকাতার রামমোহন লাইব্রেরি গৃহে আহত সভায় সভাপতির বক্তৃত।” সিংহতি-সম্পাদক মুরলীধর বস্থ অনুগ্রহপূর্বক এই বক্তৃতার প্রতিলিপি সংহতি হইতে আমাদের দেন ; তিনি আমাদের জানাইয়াছিলেন যে, এই অনুলিপি বক্তা-কর্তৃক সংশোধিত । ম্যালেরিয়া : “অ্যাণ্টি-ম্যালেরিয়া কো-অপারেটিভ সোসাইটির চতুর্থ বাৰ্ষিক সভায় সভাপতি রূপে প্রদত্ত বক্তৃত । অ্যালফ্রেড থিয়েটার হল । ২৩২ [ ১৯ ] ২৪ ।” অনুলিপি-পাঠে মনে হয় যে উহা বক্তা-কর্তৃক সংশোধিত নহে। তৎসত্ত্বেও প্রসঙ্গাকুরোধে যৎসামান্ত আক্ষরিক সংশোধনে পুনমূত্রিত হইল। বর্তমান প্রসঙ্গে ‘সমাধান প্রবন্ধের (১৩৩- ) অংশবিশেষ উন্নতিযোগ্য— “সৌভাগ্যক্রমে অনেককাল পরে একটা সদৃষ্টান্ত আমাদের হাতের কাছে এসেছে। সেটা সম্বন্ধে আলোচনা করলে আমার কথাটা পরিষ্কার হবে — বাংলাদেশ ম্যালেরিয়ায় মরছে। সে মার কেবল দেহের মার নয়, এই রোগে সমস্ত দেশটাকে মনমরা করে দিয়েছে। আমাদের মানসিক অবসাদ, চারিত্রিক দৈন্ত, অধ্যবসায়ের মভাব এই রোগজীর্ণতার ফল। ম্যালেরিয়া থেকে যদি আমরা উদ্ধার পাই তা হলে কেবল যে আমরা সংখ্যা হিসাবে বাড়ব তা নয়, শক্তি হিসাবে বেড়ে উঠব । তখন কেবল যে দুইজনের কাজ একজনে করতে পারব তাও নয়, এমন প্রকৃতির কাজ এমন ধরনে করতে পারব যা এখন পারি নে। অর্থাৎ, কেবল যে কাজের পরিমাণ বাড়বে তা নয়, কাজের উৎকর্ষ বাড়বে। তাতে সমস্ত দেশ উজ্জল হয়ে উঠবে। এ কথা সকলেই জানি, সকলেই মানি– কিন্তু সেইসঙ্গে এতকাল এই কথাই মনে লেগে রয়েছে যে, বাংলাদেশ থেকে ম্যালেরিয়া দূর করে দেওয়া বা এই রোগের হ্রাস করা অসম্ভব। বাংলাদেশ ক্রমে ক্রমে নির্মানুষ হতে পারে, কিন্তু নিৰ্মশক হবে কী করে ? অতএব অদৃষ্টে বা আছে তাই হবে। “এমন সময়ে একজন সাহসিক বলে উঠলেন, দেশ থেকে মশা তাড়াবার ভার আমি নিলুম। এত বড়ো কথা বলবার ভরসাকেই তো আমি যথেষ্ট মনে করি। এই গুরু-মান অবতার-মানা দেশে এত বড়ো বুকের পাটা তো দেখতে পাওয়া যায় না। এক-একটি গ্রাম নিয়ে তিনি কাজ আরম্ভ করেছেন। একটি গ্রামেও যদি তিনি ফল পান তা হলে সমস্ত দেশব্যাপী ব্যাধির মূলে কুঠারাঘাত করা হবে। “এইটুকুমাত্র কাজই তার যথার্থ কাজ, মহৎ কাজ। কোনো একটিমাত্র জায়গায় যদি তিনি দেখিয়ে দিতে পারেন যে, বিশেষ উপায়ে রোগের বাহনকে দূর করে দেওয়া যেতে