পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৫৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

७8२ রবীন্দ্র-রচনাবলী কী ! আমি আমার স্ত্রীর বালা গড়াবার জন্যে র্তার কাছ থেকে নমুনাস্বরূপ গহনা এনে ফিরিয়ে দিচ্ছি নে ? দেখো, এ সম্বন্ধে আমার অনেকগুলি কথা বলবার ছিল, কিন্তু আপাতত একটি বললেই যথেষ্ট হবে— আমি কারো কাছ থেকে কোনো গহনা আনি নি এবং আমার স্ত্রীই নেই। প্রধান প্রধান কথা আর যা বলবার ছিল সে আজকের মতো মাপ করবেন— গলা শুকিয়ে তৃষ্ণায় ছাতি ফেটে মরছি । আপনি আর আধ ঘণ্টা কাল অপেক্ষ করুন, সমস্ত সমাচার অবগত হবেন । ( উচ্চৈঃস্বরে ) ওরে উদয়, ওরে উদে, ওরে লক্ষ্মীছাড়া হতভাগা পাজি ছুচে ভ্যাম শুয়ার ইস্ট পিড— ওরে পেট যে জলে গেল, গলা যে শুকিয়ে যায়, মাথা যে ফেটে যাচ্ছে— ওরে নরাধম, কুলাঙ্গার ! আরে না মশায় ! আপনাদের সম্ভাষণ করছি নে। আপনারা হঠাৎ চঞ্চল হবেন না। আমি পেটের জালায়, মনের খেদে, আমার প্রাণের বন্ধুকে ডাকছি। আপনারা বস্থন । 甬 நன் আর বসতে পারছেন না? অনেক দেরি হয়ে গেছে ? সে কথা আর আমাকে বলতে হবে না। দেরি হয়েছে সন্দেহ নেই। তা হলে আপনাদের আর পীড়াপীড়ি করে ধরে রাখতে চাই নে। তবে আজকের মতো আপনারা আসুন। আপনাদের সঙ্গে মিষ্টালাপে এতক্ষণ সময়টা বেশ মুখে কেটেছিল। কিন্তু, এখন যে কথাগুলো বলছেন ওগুলো কিছু অধিক পরিমাণেই বলছেন। খুব পরম বন্ধুকেও মানুষ ভালোবেসে শ্যালক সম্ভাষণ করতে হঠাৎ কুষ্ঠিত হয়, কিন্তু আপনাদের সঙ্গে অতি অল্পক্ষণের আলাপেই যে আপনারা এতটা বেশি ঘনিষ্ঠতা আত্মীয়তা করছেন সেজন্যে আমি মনে মনে কিছু লজ্জাবোধ করছি। জানবেন আপনাদের প্রতি আমার আন্তরিক কোনোরকম অসম্ভাব নেই, কিন্তু আপনারা অামার কাছে যতটা প্রত্যাশা করছেন আমি ততটা দিতে একেবারে অক্ষম। মশায়রা আর বাড়াবাড়ি করবেন না। আপনার বোধ হয় দু বেলা নিয়মিত আহার করে থাকেন, খিদে পেলে মানুষের মেজাজটা কিরকম হয় ঠিক জানেন না, তাই আমাকে এমন অবস্থায় ঘণটাতে সাহস করছেন। আবার ! ফের ! দেখো বাপু, আমার সঙ্গে পারবে না। শরীরটা দেখেই বুঝতে পারছ না! বহু কষ্টে রাগ চেপে আছি, পাছে একটা খুনোখুনি কাও করে বসি । আচ্ছা, আমাকে রাগা ও দেখি । দেখি তোমাদের কত ক্ষমতা। কিছুতেই রাগাতে পারবে না। এই দেখো আমি খুব গম্ভীর হয়ে ঠাণ্ডা হয়ে বসলুম। ও বাবা ! এরা যে সবাই মিলে মারধোর করবার জোগাড় করে । খালি পেটে,