পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/১০৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পূরবী সেদিন মনে হত কেন ওই ভাষারই বাণী যেন লুকিয়ে আছে হৃদয়কুঞ্জছায়ে ; তাই আমনি নবীন রাগে কিশলয়ের সাড়া লাগে শিউরে-ওঠা। আমার সারা গায়ে । আবার যেদিন আশ্বিনেতে নদীর ধারে ফসল-খেতে সূৰ্য-ওঠার রাঙা-রঙিন বেলায় নীল আকাশের কুলে কুলে সবুজ সাগর উঠত দুলে কচি ধানের খামখেয়ালি খেলায় সেদিন আমার হত মনে ওই সবুজের নিমন্ত্রণে যেন আমার প্রাণের আছে দাবি ; কোন ভুলে হায় হারিয়েছিল চাবি ৷ ܓ কার কথা এই আকাশ বেয়ে বলে দিনে, বলে গভীর রাতে—

  • যে-জননীর কোলের পরে জন্মেছিলি মর্ত—ঘরে, প্ৰাণ ভরা তোর যাহার বেদনাতে,

তাহার বক্ষ হতে তোরে কে এনেছে হরণ করে, ঘিরে তোরে রাখে নানান পাকে । বাধন-ছেড়া তোর সে নাড়ী সইবে না। এই ছাড়াছড়ি, ফিরে ফিরে চাইবে আপন মাকে ৷” শুনে আমি ভাবি মনে তাই ব্যথা এই অকারণে, প্রাণের মাঝে তাই তো ঠেকে ফাঁকা, তাই বাজে কার করুণ সুরে— ‘গেছিস দূরে অনেক দূরে’, কী যেন তাই চোখের ”পরে ঢাকা । S (ł