পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/১১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Soo রবীন্দ্ৰ-রচনাবলী ভালে তব বরণের টিকা ; কবি, আজ হতে সে কি বারে বারে আসি তব শূন্যকক্ষে তোমারে না দেখি উদ্দেশে ঝরায়ে যাবে শিশিরসিঞ্চিত পুষ্পগুলি নীরবসংগীত তব দ্বারে ? - জানি তুমি প্ৰাণ খুলি এ সুন্দরী ধরণীরে ভালোবেসেছিলে । তাই তারে সাজায়েছ দিনে দিনে নিত্য নব সংগীতের হারে । অন্যায় অসত্য যত, যত কিছু অত্যাচার পাপ কুটিল কুৎসিত ত্রুর, তার পরে তব অভিশাপ বর্ষিীয়াছ ক্ষিপ্ৰবেগে অর্জনের অগ্নিবাণ-সম ; তুমি সত্যবীর, তুমি সুকঠোর, নির্মল, নির্মম, করুণ, কোমল । তুমি বঙ্গভারতীর তন্ত্রী-’পরে একটি অপূর্বতন্ত্র এসেছিলে পরাবার তরে । সে তন্ত্র হয়েছে বাধা ; আজ হতে বাণীর উৎসবে তোমার আপনি সুর কখনো ধ্বনিবে মন্দ্ররবে, কখনো মঞ্জল গুঞ্জরণে। বঙ্গের অঙ্গনতলে বর্ষা-বসন্তের নৃত্যে বর্ষে বর্ষে উল্লাস উথলে ; সেথা তুমি ঐকে গেলে বর্ণে বর্ণে বিচিত্র রেখায় দিয়ে গেলে তোমার সংগীত ; কাননের পল্লবে কুসুমে রেখে গেলে আনন্দের হিল্লোল তোমার । বঙ্গভূমে যে তরুণ যাত্রীদল রুদ্ধদ্বার-রাত্রি-অবসানে নিঃশঙ্কে বাহির হবে নবজীবনের অভিযানে নব নব সংকটের পথে পথে, তাহদের লাগি জয়মাল্য বিরচিয়া, রেখে গেলে গানের পাথেয় বহ্নিতেজে পূর্ণ করি ; অনাগত যুগের সাথেও ছন্দে ছন্দে নানাসূত্রে বেঁধে গেলে বন্ধুত্বের ডোর, গ্ৰন্থি দিলে চিন্ময় বন্ধনে, হে তরুণ বন্ধু মোর, সত্যের পূজারি । দেখে নাই যাহারা তোমারে, তুমি তাদের উদ্দেশে দেখার অতীত রূপে আপনারে করে গেলে দান দুরকালে । তাঁহাদের কাছে তুমি নিত্য-গাওয়া গান মূর্তিহীন । কিন্তু যারা পেয়েছিল প্রত্যক্ষ তোমায় অনুক্ষণ তারা যা হারাল তার সন্ধান কোথায়, কোথায় সাত্মনা ? বন্ধুমিলনের দিনে বারংবার উৎসব-রাসের পাত্র পূর্ণ তুমি করেছ। আমার প্ৰাণে তব, গানে তব, প্রেমে তব, সৌজন্যে, শ্রদ্ধায়, আনন্দের দানে ও গ্রহণে ।। সখা, আজ হতে হায়,