পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/১৮১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পূরবী ১৬৫

যেন আমি আলােকের নিঃশব্দ নিঝরে মন্থর মুহূর্তগুলি ভাসায়ে দিতেছি লীলাভরে । ধরণীর বক্ষ ভেদি যেথা হতে উঠিতেছে ধারা পুষ্পের ফোয়ারা,

তৃণের লহরী,

সেখানে হৃদয় মাের রাখিয়াছি ধরি ; ধরে চিত্ত উঠিতেছে ভরি সরভের স্রোতে। ধূলি-উৎস হতে প্রকাশের অক্লান্ত উৎসাহ, জন্মমৃততরঙ্গিত রূপের প্রবাহ স্পন্দিত করিছে মাের বক্ষস্থল আজি । রক্তে মাের উঠে বাজি তরঙ্গের অরণ্যের সম্মিলিত স্বর, নিখিল মর্মর। এ বিশ্বের স্পর্শের সাগর আজ মাের সর্ব অঙ্গ করেছে মগন । এই স্বচ্ছ উদার গগন বাজায় অদৃশ্য শঙ্খ, শব্দহীন সুর । আমার নয়নে মনে ঢেলে দেয় সুনীল সুদূর। বুয়েনােস এয়ারিস ১ নভেম্বর ১৯২৪ বিদেশী ফুল হে বিদেশী ফুল, যবে আমি পুছিলাম— কী তােমার নাম, হাসিয়া দুলালে মাথা, বুঝিলাম তবে নামেতে কী হবে। আর কিছু নয়, হাসিতে তােমার পরিচয়। হে বিদেশী ফুল, যবে তােমারে বুকের কাছে ধরে শুধালেম বলাে বলাে মােরে কোথা তুমি থাকো, হাসিয়া দুলালে মাথা, কহিলে ‘জানি না, জানি নাকো । বুঝিলাম তবে শুনিয়া কী হবে থাকো কোন দেশে । যে তােমারে বােঝে ভালােবেসে তাহার হৃদয়ে তব ঠাই, আর কোথা নাই।