পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/২১২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Y No 8 সান ইসিড্রো ২৭ ডিসেম্বর ১৯২৪ রবীন্দ্র-রচনাবলী শুনেছি গানের তালে সুবাতাস লাগে পালে— বীণা ফেলে এসেছি আমার । বনস্পতি পূর্ণতার সাধনায় বনস্পতি চাহে উধৰ্ব্বপানে ; পুঞ্জ পুঞ্জ পল্লবে পল্লবে । নিত্য তার সারা জাগে বিরাটের নিঃশব্দ আহবানে, মন্ত্র জপে মমরিত রবে । ধ্রুবত্বের মূর্তি সে যে, দৃঢ়তা শাখায় প্রশাখায় বিপুল প্ৰাণের বহে ভার । আন্দোলিয়া উঠে বারংবার । দয়া কোরো, দয়া কোরো আরণ্যক এই তপস্বীরে— ধৈর্য ধরে ওগো দিগঙ্গনা, ব্যৰ্থ করিবারে তার অশান্ত আবেগে ফিরে ফিরে বনের অঙ্গনে মাতিয়ো না । এ কী তীব্র প্ৰেম, এ যে শিলাবৃষ্টি নির্মম দুঃসহ— দুরন্ত চুম্বনবেগে তব ছিড়িতে ঝরাতে চাও অন্ধ সুখে কহাে মোরে কহাে কিশোর কোরক নব নব ? অকস্মাৎ দস্যতায় তারে রিক্ত করি নিতে চাও সর্বস্ব তাহার তব সাথে ? ছিন্ন করি লবে যাহা চিহ্ন তার রবে না কোথাও, হবে তারে মুহুর্তে হারাতে । যে লুব্ধ ধূলির তলে লুকাতে চাহিবে তব লাভ সে তোমারে ফাকি দেবে শেষে । লুণ্ঠনের ধন লুঠি সর্বগ্রাসী দারুণ অভাব উঠিবে কঠিন হাসি হেসে । আসুক তোমার প্ৰেম দীপ্তিরূপে নীলাম্বরতলে, শান্তিরূপে এসো দিগঙ্গানা ! উঠুক স্পন্দিত হয়ে শাখে শাখে পল্লবে বন্ধলে সুগভীর তোমার বন্দন ।