পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ܟܠ ܓ রবীন্দ্র-রচনাবলী সে ইচ্ছাটি তারই পুরাতে চাই যেমন করেই পারি। এমন করে আর কেন দিন কাটাই মিছিমিছি ।” “ब्ा न्ा, छि छि, छिछि ।' এই ব’লে সে মঞ্জলিকা দু-হাত দিয়ে মুখখানি তার ঢেকে ছুটে গেল। ঘরের থেকে । আপন ঘরে দুয়ার দিয়ে পড়ল মেঝের 'পরে— ঝরঝরিয়ে ঝরঝরিয়ে বুক ফেটে তার অশ্রু ঝরে পড়ে । ভাবিলে, “ পোড়া মনের কথা এড়ায় নি। ওঁর চোখ । আর কেন গো । এবার মরণ হোক ৷” মঞ্জলিকা বাপের সেবায় লাগল দ্বিগুণ ক’রে অষ্টপ্রহর ধরে । আবশ্যকটা সারা হলে তখন লাগে অনাবশ্যক কাজে, যে-বাসনটা মাজা হল আবার সেটা মাজে । দু-তিন ঘণ্টা পর একবার যে-ঘরে ঝেড়েছে ফের ঝাড়ে সেই ঘর । কখন যে স্নান, কখন যে তার আহার, ঠিক ছিল না। তাহার । কাজের কামাই ছিল নাকে যতক্ষণ না রাত্রি এগারোটায় শ্রান্ত হয়ে আপনি ঘুমে মেঝের 'পরে লোটায়। যে দেখল সে-ই অবাক হয়ে রইল চেয়ে, বাপ শুনে কয় বুক ফুলিয়ে, “গর্ব করি নেকে, কিন্তু তবু আমার মেয়ে সেটা স্মরণ রেখো । আমার কাছেই শিক্ষা যে ওর । নইলে দেখতে অন্যরকম হত । সংযমেরই কঠোর সাধন বিনে সমাজেতে রায় না কোনো বাধ, স্ত্রীর মরণের পরে যাবে সবেমাত্র এগারো মাস হবে, গুজব গেল শোনা এই বাড়িতে ঘটক করে আনাগোনা । প্রথম শুনে মঞ্জলিকার হয় নিকো বিশ্বাস, তার পরে সব রকম দেখে ছাড়লে সে নিশ্বাস । ব্যস্ত সবাই, কেমনতরো ভাব আসছে। ঘরে নানা রকম বিলিতি আসবাব !