পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৪১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

○と রবীন্দ্র-রচনাবলী “ফিরে আসছে না, এমন কথা বলছ কী করে অকৃতজ্ঞ ? চাই, চাই, চাই, তােমার চেয়ে বেশি কিছু চাই নে এ ১০ গাতে । যে সময়ে দেখা হলে শুভদৃষ্টি সম্পূর্ণ হত সে সময়ে হয় নি যে দেখা । কিন্তু তু दलछि उाका श्श नेि ।” “আমার জীবন সার্থক হত, কতটুকুই বা তার দাম । কারও মতো নও যে তুমি ; মস্ত তুমি, তফাতে আছি বলেই দেখতে পেলুম সেই তোমার আলোকসামান্য প্রকাশ | সামান্য আমাকে দি তোমাকে জড়িয়ে ফেলবার কথা কল্পনা করতে আমার ভয় করে । আমার ছােটাে সংসারে প্রতিদিলে তুচ্ছতার মানুষ হবে তুমি ! আমি কত উপরে মুখ তুলে তোমার মাথা দেখতে পাই তোমাকে বোঝ", কেমন করে ? মেয়েদের সম্বল জীবনের যত সব খুঁটিনাটি, সেই বােঝা দিয়ে তোমাদের মতো পুরুষের জীবনকেও চাপা দিতে ভয় পায় না। এমন মেয়ে হয়তো আছে ; তারা ট্রাজেডি ঘটিয়েছে কত আমি ? জানি । চােখের সামনে দেখছি লতার জালে বনস্পতিকে বাড়তে দিল না ; সেই মেয়েরা বুঝি মাে. করে ৩াদের জড়িয়ে ধরাই যথেষ্ট ।” “এলা, যে পায় সেই জানে যথেষ্ট কাকে বলে ।” “নিজেকে ভোলাতে চাই নে, অস্তু। প্রকৃতি আমাদের আজন্ম অপমান করেছে ! আমার বায়োলজির সংকল্প বহন করে এসেছি জগতে । সঙ্গে সঙ্গে এনেছি জীবপ্রকৃতির নিজের জোগানো অস্তু ও মন্ত্র | সেগুলো ঠিকমত ব্যবহার করতে জানলেই সস্তায় আমরা জিতে নিতে পারি। আমাদের সিংহাসন | সাধনার ক্ষেত্রে পুরুষকে প্রমাণ করতে হয় তার শ্রেষ্ঠতা | সেই শ্রেষ্ঠত যে কী, ভাগ্যক্রমে, আমি তা জািনবার সুযোগ পেয়েছি । পুরুষরা আমাদের চেয়ে অনেক বড়ো ।” “মাথায় বড়ো ।” “ই মাথায় বড়োই তো | প্রকৃতিকে অতিক্রম করে বড়ো হবার তোরণদ্বার সেই মাথায় | আমার বুদ্ধিসুদ্ধি যথেষ্ট থাক না-থাক, আমি নম্র হয়ে নিজেকে নিবেদন করতে পেরেছি। সেই উপরের দিকে চেয়ে ।” “ কোনো নীচ উৎপাত করে নি ?” করেছে । আমাদের টানে যারা নেমে আসে বায়োলজির নীচের তলায়, তারা বিশ্ৰী হয়ে বিগড়ে যায় । ব্যক্তিগত বিশেষ ইচ্ছে বা প্রয়োজন না থাকলেও নীচে টেনে আনবার একটা সাধারণ যড়যন্ত্রে আমরা সমস্ত মেয়ে এক হয়ে যোগ দিয়েছি, সাজে সজায় হাবেভাবে বানানো কথায় ?” “ই গো, তোমরা বোকা ! অতি সহজ মন্ত্রেই ভোল, তাই আমাদের এত গুমার । আমরা বোকাদের ভালোবেসেছি, তবু তাদের স্কুল বােকামির সর্বোচ্চ শিখরে দেখেছি সূর্যোদয়, আলো এনেছে তারা, পৃক্ত: করেছি তখন । অনেক দেখেছি ইতর নোংরা নিন্দুক, অনেক দেখেছি কৃপণ কুৎসিত। সব বাদ দিয়ে সব মেনে নিয়ে তবু অনেক বাকি থাকে । সেই বাকিদেরই দেখেছি উজ্জ্বল আলোয় । তাদের অনেকের নাম থাকবে না। কারও মনে, তবু তারা বড়ো ।” “এলী, তোমার কথা শুনে লজা করছে, মনে হচ্ছে একটা প্ৰতিবাদ না করলে ভালো শোনাবে না । তবু ভালোও লাগছে। কিন্তু সত্য কথায় তোমার কাছে হার মানতে পারব না । আমাদের দেশের পুরুষদের যে কাপুরুষতার লক্ষণ ছেলেবেলা থেকে দেখেছি, যার কথা আমাকে বার বার ভাবিয়েছে, সে আমি আজ তোমার কাছে বলব । আমি দেখেছি আমার জানা পরিবারের মধ্যে এবং আমার নিজের পরিবারেরও শাশুড়ির অসহ্য অন্যায় আধিপত্য । শাশুড়ির অত্যাচারের কথা চিরকাল এদেশে প্রচলিত ।” “হী সে তো জানি । নিজের ঘরে দেখেছি, যে-মানুষ হাড়ে দুর্বল, দুর্বলের যম সে— তার মতো নিষ্ঠুর কেউ হতে পারে না ।” “এলা, ও-কথা বলে তুমি তোমার ভাবী শাশুড়ির নিন্দার ভূমিকা করে রেখো না। নববধূর পরে ァ・